মানবিকতার তাৎপর্যপূর্ণ দৃষ্টান্ত রাখল সুন্দরবন পুলিশ। কয়েকদিন আজেই প্রকাশ্যে এসেছিল রায়দীঘির বকুলতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কথা। সেখানে শিশুদের মনের কথা জানতে রাজ্য সরকারের তরফে চালু করা হয়েছিল অভিনব ও নতুন এক প্রকল্প, ‘মনের কথা’ ড্রপবক্স। সেই ড্রপবক্সেই নিজেদের মনের কথা কাগজ-পেনসিলে লিখে জমা দিয়েছিল কচিকাঁচারা। সেইসব চিরকুট পড়ে চোখে জল এসে গেছিল সকলের। সংবাদমাধ্যমেও সামনে এসেছিল সে সব লেখা। এবার সেই স্কুলে হাতভরা উপহার নিয়ে পৌঁছল ‘পুলিশকাকু’র দল। সকলের হাতে তুলে দেওয়া হল পেনসিলবক্স, টিফিনবক্স, খেলনা, এমন নানান উপহার। পাশাপাশি গাছের চারাও দেওয়া হয়েছে বাচ্চাদের। এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘শিশুদের মাঝে, শিশুদের সঙ্গে’। গতকাল, বুধবার রায়দীঘির ওই স্কুলে প্রকল্পের সূচনা করেন সুন্দরবনের পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও।
এপ্রসঙ্গে কোটেশ্বর রাও বলেন, “শিশুরা অতিরিক্ত সংবেদনশীল। তাদের মনের কথা বুঝতে হবে আমাদের। ওদের অভিযোগকে সমান গুরুত্ব দিতে হবে।” সুপার জানিয়েছেন, মাধ্যমিক পরীক্ষার পরেও ফের স্কুলগুলিতে যাবে পুলিশ। শিক্ষক, অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলবে। ইঁদুর দৌড়ের চাপে যেন কোনও শৈশব পিষে না যায়, সে জন্যই এই উদ্যোগ সুন্দরবন জেলা পুলিশের। দিন কয়েক আগের সেইসব চিরকুটে কেউ লিখেছিল, “আমরা খুব গরিব। মা নেই। আমার বন্ধুর মায়েরা কত ভালোবাসে।” কারও বা আক্ষেপ, “আমার বাবা পেন্সিল বক্স কিনে দিতে পারেনি।” কারও বক্তব্য, “সারাদিন পড়তে ভাল লাগে না।” কেউ বা বলেছে, “আমাকে কেউ ভালোবাসে না, আমি কাউকে বলতে পারি না, খুব খারাপ লাগে।” শিশুমনের এসব অভিযোগ একেবারেই লঘুভাবে নেননি পুলিশরা। কাজেই সেই সমস্যাগুলির দ্রুত সমাধান করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।