ফের বড়সড় বিপাকে পড়ল বিজেপি। আরও একবার প্রকট হয়ে উঠল দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্ব। এবার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে অভিযোগকারীকেই শাস্তি দিল পদ্মশিবির! যিনি অভিযোগ করেছিলেন দলের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে, সেই প্রাক্তন মণ্ডল সভাপতিকেই বহিষ্কার করল দল। দাবি মতো টাকা না দেওয়ায় দলীয় পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে, বিজেপির উত্তর কলকাতা শহরতলি জেলার অপসারিত মণ্ডল সভাপতি উত্তম সাউ এমনই অভিযোগ জানিয়ে এসেছিলেন দলের রাজ্য দফতরে। তাঁর সেই অভিযোগপত্রে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়ের নামের পাশাপাশি দলের উত্তর কলকাতা শহরতলি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অরিজিৎ বক্সির নামও ছিল। গত মঙ্গলবার বিজেপির রাজ্য দপ্তরে গিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ জানিয়ে এসেছিলেন। সুরাহা পাবেন এই আশাতেও ছিলেন। কিন্তু অভিযোগকারী প্রাক্তন মণ্ডল সভাপতি সেই উত্তম সাউকেই বহিষ্কারের চিঠি ধরাল রাজ্য বিজেপি নেতারা। রাজ্য বিজেপির তরফে উত্তমবাবুকে পাঠানো চিঠির নিচে নাম রয়েছে রাজ্য কার্যালয় সম্পাদক প্রণয় রায়ের।
উক্ত চিঠিতে বলা হয়েছে, দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ও রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নির্দেশে উত্তম সাউকে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ ও দল বিরোধী কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে। এদিকে, দলের জেলা সভাপতি ও রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের নাম অভিযোগপত্রে লিখে তাঁদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ করার পরও কেন উলটে তাঁকে বহিষ্কার করা হল তার কোনও উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না ওই প্রাক্তন মণ্ডল সভাপতি। উত্তমবাবুর বক্তব্য, নরেন্দ্র মোদিজি বিজেপির জন্য এত লড়াই করছেন। তখন বাংলায় রাজ্য নেতাদের একাংশ দলটাকে শেষ করে দিচ্ছে। এদিকে, মণ্ডল সভাপতির অভিযোগকে ঘিরে তুলকালাম শুরু হয় বঙ্গ বিজেপির অন্দরেই। রাজ্য বিজেপির একাধিক নেতা দলের অন্দরে দাবি তোলেন, জেলা সভাপতি ছাড়াও রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এই ঘটনাটি নিয়ে অভিযোগপত্রের ছবি তুলে ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়ে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বকে কাঠগড়ায় তোলে ‘সেভ বেঙ্গল বিজেপি’ সংগঠন। কেন উত্তমকে বহিষ্কার করা হল? তাঁর অভিযোগকে কেন গুরুত্ব না দিয়ে অভিযুক্তদের আড়াল করা হল? দলের একাংশ এমনই প্রশ্ন তুলেছে। উল্লেখ্য, উত্তমের অভিযোগ ছিল, তাঁর থেকে প্রথমে ৭ লক্ষ ও পরে তা কমিয়ে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করা হয় মণ্ডল সভাপতি পদে রাখার জন্য। “জেলা সভাপতি বলেছিলেন মণ্ডল সভাপতির পদ রাখতে গেলে ৭ লক্ষ টাকা দিতে হবে। আমি না দিতে পারায় ৫ ফেব্রুয়ারি জেলার কার্যকারিণী বৈঠকের দিন আমায় পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়”, জানিয়েছেন উত্তম। স্বাভাবিকভাবেই এমন ঘটনার পর অস্বস্তিতে পড়েছে গেরুয়া-শিবির।