এবার উত্তর বাংলার চা বাগানের শ্রমিকদের পাশাপাশি নির্মাণ শ্রমিকদের শিশুদের রাখার ক্রেশ তৈরির পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। পাশাপাশি নির্মাণ করা হবে স্বাস্থ্যকেন্দ্রও। প্রসঙ্গত, উত্তরবঙ্গের চা বাগানের মহিলা শ্রমিকদের সুবিধার জন্য ক্রেশ তৈরি করার কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক এই ঘোষণা করেছেন। মূলত উত্তরবঙ্গের চা বাগানগুলিতে অধিকাংশ মহিলা শ্রমিক তাঁদের শিশুদের সঙ্গে নিয়ে বা অন্যত্র বসিয়ে চা পাতা তোলার কাজ করে থাকেন। একইভাবে নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত বহু মহিলা শ্রমিকও শিশুদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করে থাকেন। তাঁদের সুবিধার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার এই বিষয় নিয়ে উত্তরকন্যায় একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, জিটিএ প্রধান অনিত থাপা, জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু, দার্জিলিং জেলাশাসক এস.পূলম্বলাম, বিধায়ক বুলু চিক বরাইক, এসজেডিএ চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী, রাজ্যসভার সাংসদ শান্তা ছেত্রী, রাজ্য শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। মূলত কীভাবে এই প্রকল্পকে বাস্তবায়িত করা যায় সেই লক্ষ্যে এদিনের বৈঠক করা হয়। পাথর ভাঙা বা পাথর তোলা বা নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত মহিলা শ্রমিকদের সুবিধার্থে রাজ্য সরকার বিভিন্ন চা বাগানে ক্রেশ খোলার কথা চিন্তা ভাবনা করছে। এর মাধ্যমে মায়েরা শিশুদের সুরক্ষিত ভাবে রেখে কাজে বেরতে পারবে। শুধু তাই নয়, শিশু ও শ্রমিকদের স্বাস্থ্যর কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন বাগানে স্বাস্থ্যকেন্দ্র খোলার ভাবনাও রয়েছে রাজ্য সরকারের। ইতিমধ্যেই ক্রেশ ও স্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বেশ কয়েকটি চা বাগানে। এদিন মলয় ঘটক জানান, উত্তরবঙ্গে মোট ৭০টি ক্রেশ ও ৪৩টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি করা হবে। যার কাজ বেশ কিছু জায়গায় শুরু হয়েছে। দ্রুত এই প্রকল্প যাতে চালু করা যায় সেই কারণে আজকের এই বৈঠক আয়োজিত হয়েছে।
আজ শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, “যে সমস্ত মায়েরা বাচ্চাদের কোলে নিয়ে, কাঁধে নিয়ে কাজ করেন সেই সমস্ত মায়েদের আর বাচ্চা নিয়ে কাজ করতে হবে না। তাঁরা নিশ্চিন্তে ক্রেশে বাচ্চা রেখে কাজ করতে পারবেন। ক্রেশে বাচ্চাদের খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করবে স্বনির্ভর গোষ্ঠী। ফলে কাজ করতে গিয়ে মায়েদের আর কোনও সমস্যায় পড়তে হবে না।” প্রসঙ্গত, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গের শ্রমিকদের সুবিধার জন্য ক্রেশ তৈরি করার কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন। সেই ঘোষণা মতোই তিনি রাজ্যের শ্রম দফতরকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই কথা মাথায় রেখে ক্রেশ তৈরির কাজ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শ্রমমন্ত্রী। কীভাবে ক্রেশগুলি এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি পরিচালনা করা হবে, তা নিয়ে আজকের বৈঠকে বিবিধ আলোচনা হয়েছে।