অভিনব পদক্ষেপ নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সুন্দরবনের জঙ্গলে মাছ, কাঁকড়া ধরতে যান সে-এলাকার বাসিন্দারা। যা তাঁদের রোজগারের মাধ্যম। পেটের টানে জঙ্গলে গিয়ে অনেকেই প্রাণ হারান বাঘের আক্রমণে। এবার সুন্দরবনের বাসিন্দাদের এই জঙ্গল নির্ভরতা কমাতে উদ্যোগী হল রাজ্য। মহিলাদের স্বনির্ভর করতে গত কয়েক মাস ধরে হাতের কাজ শেখাচ্ছে বন দফতর। সুন্দরবনের নদী তীরবর্তী কুমিরমারি, সাতজেলিয়া, লাহিড়ীপুর, পাখিরালয়-সহ আশপাশের এলাকার মানুষরা পেটের টানেই জঙ্গলে যান। সেখানে মাছ, কাঁকড়া ধরেন। মধু সংগ্রহ করেন। তা করতে গিয়ে বার বার বাঘের হামলার মুখে পড়েন বহু মানুষ। বহু পরিবার স্বজন হারিয়েছেন। এ বার স্থানীয়দের জঙ্গল নির্ভরতা কমাতে নানা উদ্যোগ নিল বন দফতর ও সুন্দরবনব্যাঘ্র প্রকল্প। সেই নিয়ে নদীর তীরবর্তী এলাকায় চলছে প্রচারও।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই গ্রামে মৌমাছি পালন করে মধু সংগ্রহ, পুকুরে মাছ চাষ-সহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। এ বার গ্রামের মহিলাদের হাতের কাজ শেখাচ্ছে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প। গত তিন মাস ধরে যৌথ বন পরিচালন কমিটির মহিলাদের এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। প্রশিক্ষণ পেয়ে গ্রামের মহিলারা এখন ফুলদানি, ব্যাগ, টি শার্ট-সহ ঘর সাজানোর জিনিস তৈরি করছেন। সবেতেই রয়েছে সুন্দরবনের ছোঁয়া। তাঁদের তৈরি এই সব জিনিস বিক্রির জন্য সজনেখালিতে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প। সুন্দরবনে এখন পর্যটনের মরসুম চলছে। সুন্দরবনে বেড়াতে এসে এই প্রদর্শনী থেকে পর্যটকরা নানা জিনিস কিনতে পারছেন। এর ফলে রোজগারও হতে শুরু করেছে মহিলাদের। প্রদর্শনীতে বসে মহিলারা জিনিসপত্র তৈরিও করছেন। কিনতে এসে সেই জিনিস তৈরি করা দেখতে পর্যটকরা ভিড় জমাচ্ছেন। কলকাতার একটি বেসরকারি সংস্থা মহিলাদের এই প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। ক্রমশ স্বনির্ভর হয়ে উঠছেন মহিলারা।