ক্ষমতায় আসার পর বাংলাবাসীর জন্য বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্প চালু করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। পাশাপাশি, প্রকল্পগুলি যাতে রাজ্যের প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে যায় তা নিশ্চিত করার জন্য একজোট হয়ে কাজ করছেন সমস্ত দলীয় কর্মী। ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ প্রচারকার্য ৩.৫ লক্ষ দলীয় কর্মীকে একত্রিত করেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চালু করা এই দলীয় কর্মীরা, এখন দিদির দূত নামে পরিচিত।
আসা যাক শেখ নাজিরের কথায়। প্রথম দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে বামপন্থী সমর্থক এবং কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ ও বেড়ে ওঠা, বীরভূমের ইলামবাজার এলাকার বাসিন্দা ২৭ বছর বয়সী শেখ নাজির কখনোই ভাবেননি যে তিনি একদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শের প্রবল সমর্থক হয়ে উঠবেন। গত এক মাস ধরে কৃষিকাজ এবং তাঁর পারিবারিক দায়িত্ব সামলেও, দিদির দূত হিসেবে শেখ নাজির রাজ্যের ২০০টিরও বেশি পরিবারের কাছে গিয়ে দিদির সুরক্ষা কবচ প্রচারকার্যের অন্তর্ভুক্ত ১৫টি কল্যাণমূলক প্রকল্প সম্পর্কে মানুষদের অবগত করেছেন। তিনি বলেছেন, “২০১১ সালে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যে এবং আমার এলাকায় সবকিছু বদলে গিয়েছে। শৈশবে আমরা যে জরাজীর্ণ রাস্তা দেখেছি তা এই কয়েক বছর ধরে উন্নত হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরে আমরা রাস্তায় আলো দেখেছি এবং পানীয় জলের পাশাপাশি কৃষকদের জন্য বরাদ্দ অর্থও পেয়েছি। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের সুবিধা পাওয়ার পরে আমার মা এবং বোন যে আনন্দটি অনুভব করেছেন সেই একই আনন্দ যাতে রাজ্যের প্রতিটি ঘরে পৌঁছে যায় তা নিশ্চিত করতে এই প্রকল্প আমায় অনুপ্রাণিত করেছিল৷”
পাশাপাশি, কুলতলির অম্বর আলি মোল্লা বলেছেন, “আমার স্ত্রী এবং আমাদের পরিবারের অন্যান্য মহিলারা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা পান। আমার মেয়ে, যে দশম শ্রেণিতে পড়ে, কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধে পাচ্ছে এবং সবুজ সাথী প্রকল্পের অধীনে একটি সাইকেলও পেয়েছে৷” আলি জানিয়েছেন যে, তিনি অত্যন্ত আশাবাদী যে তাঁর মেয়ে একাধিক সহায়ক প্রকল্পের মাধ্যমে তার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নকে পূরণ করতে সক্ষম হবে। একটি দোকান পরিচালনা করার সঙ্গে সঙ্গে দিদির দূত হিসেবে কাজ করা সহজ নয়। “আমি যখন মানুষের বাড়িতে বাড়িতে যাই তখন আমার ভাইয়েরা দোকানের দেখাশোনা করে। আমি মনে করি দিদির সুরক্ষা কবচের জন্য আমার আরও সময় দেওয়া দরকার, বিশেষ করে সেই পরিবারগুলিকে যারা গত নির্বাচনের সময় কোনও না কোনও ভুল ধারণার কারণে তৃণমূল কংগ্রেসকে বেছে নেয়নি”, মত আলির।
অন্যদিকে হাওড়ার বাসিন্দা ভাস্কর প্রামাণিক বলেছেন, “আগে, আমার স্কুলে ক্লাস শেষ হওয়ার পর কিছুই করতাম না। কিন্তু এখন, আমি স্কুলের পরে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারি এবং তাদের রেশন কার্ড তৈরি করতে সাহায্য করি, যা তাদের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার এবং অন্যান্য প্রকল্পের সুবিধা পেতে সক্ষম করবে। আমি আমার গ্রামের বাসিন্দাদের সাহায্য করে নিজের সন্তুষ্টি অর্জন করি, বিশেষ করে যারা বয়স্ক আমি তাঁদের সহায়তা করি।” তাঁর কাজ মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছে বলেই জানিয়েছেন ভাস্কর।