নির্মলা সীতারামনের কেন্দ্রীয় বাজেটের পর রাজ্যবাসী তাকিয়ে আছেন ‘মমতাময়ী’ রাজ্য বাজেটের দিকে। কারণ, গত ১ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় বাজেট পেশের দিনেই বিজেপি-সরকারকে তুলোধনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বোলপুরে তৃণমূলের এক সভায় তিনি কেন্দ্রীয় বাজেটকে অমাবস্যার অন্ধকার বলে কটাক্ষ করেন। তিনি সেদিন বলেন, এই বাজেটে কোনও আশার আলো নেই। আছে শুধু অমাবস্যার অন্ধকার। তাঁর মতে, এই বাজেট শুধু এক শ্রেণির মানুষের জন্য। বেকারত্ব দূরীকরণের কোনও প্রস্তাব নেই। বেকারদের জন্য একটা কথাও বলা নেই বাজেটে। তিনি বলেন, চাকরি যা ছিল, কেন্দ্রীয় সরকার তাও তুলে দিয়েছে।
মমতা বলেন, এই বাজেট গরিব বিরোধী। এমনিতেই কেন্দ্রীয় সরকার ১০০ দিনের কাজের টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। গত বছর এই খাতে বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এবার আরও কমিয়ে দিয়েছে। যে হারে মুদ্রাস্ফীতি হয়েছে, তাতে আয়করে ছাড় দিয়ে সমস্যার কোনও সমাধান হবে না। তাঁর আরও অভিযোগ, বাজেটে খাদ্যের উপর ভর্তুকি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ ছিল, বিজেপি শাসিত রাজ্য ছাড়া অন্য রাজ্যগুলিকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। আইসিডিএস প্রকল্প তুলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। তাই এই খাতেও বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। আশাকর্মীদের টাকা দেওয়াও বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র।
মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রতিক্রিয়ার পর থেকেই বঙ্গবাসীর মনে আশা জাগতে শুরু করেছে। খেটেখাওয়া মানুষ থেকে রাজ্য সরকারি কর্মচারী, গৃহবধূ থেকে কৃষক, বেকার যুবক থেকে বণিক মহল, সব স্তরেই রাজ্য বাজেটের প্রতি প্রত্যাশা তুঙ্গে উঠেছে। অনেকে এও বলছেন, মমতা কেন্দ্রীয় বাজেটের যে দিকগুলোর দিকে নিশানা হেনেছেন, এবার সেদিকগুলিতেই নজর দেবেন তিনি। বিশেষত, পঞ্চায়েত ভোট দরজায় ঘন্টি বাজাচ্ছে। তাই সমাজের সকল শ্রেণির মানুষকে খুশি করার প্রস্তাব আনতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী, এমনই আশায় বুক বেঁধে রয়েছেন রাজ্যবাসী।
এবারের বাজেটে গ্রামীণ অর্থনীতি, সমবায় ও সমবায় ব্যাঙ্ক, কৃষি, মৎস্য উৎপাদন ও রফতানি, কৃষি সরঞ্জাম, আলু উৎপাদন, গ্রামীণ বনসৃজন, সুন্দরবন উন্নয়ন, পর্যটন, মিড ডে মিল, ফুলচাষের উন্নয়নে জোর দেওয়া হতে পারে। বেকারি দূরীকরণ তথা কর্মসংস্থানের নতুন দিশা দেখানোর প্রস্তাবও আনতে পারে সরকার। মহিলাদের জন্য আকর্ষণীয় কিছু প্রস্তাব আনার চিন্তাভাবনা চলছে বলে সরকারে অন্দরে শোনা যাচ্ছে। স্কুল ও কলেজ পড়ুয়াদের ক্ষেত্র, চিকিৎসা খাত ছাড়াও সংখ্যালঘু, আদিবাসী ও মতুয়াদের জন্যও বেশ কিছু উন্নয়নমূলক প্রস্তাব আসবে বলে অনেকের বিশ্বাস।