সম্প্রতি আমেরিকার সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ তাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এনে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। তাতে স্পষ্ট বলা হয়েছিল, কারচুপি করে ধনী হয়েছেন আদানিরা। শেয়ার বাজারে তাঁদের যে অবস্থান, তার অনেকটাই কৃত্রিম। আর তারপর থেকেই ক্রমাগত পড়ছে আদানিদের শেয়ারের দর। এরই মধ্যে এবার নরওয়ে সোভরেন ওয়েল্থ ফান্ড আদানি গোষ্ঠী থেকে তাদের সমস্ত বিনিয়োগের টাকা তুলে নিল। স্ক্যান্ডিনেভিয়া তথা গোটা বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্টক ইনভেস্টর হল এই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা। সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এই আর্থিক সংস্থা বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছে যে, এ বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত একটু একটু করে আদানি গোষ্ঠীতে তাদের বিনিয়োগ করা মোট ২০০ মিলিয়ন ডলার তুলে নিয়েছে।
আদানি পোর্টস, আদানি টোটাল গ্যাস, আদানি গ্রিন এনার্জিতে বিনিয়োগ করেছিল নরওয়ে ওয়েল্থ ফান্ড। সাংবাদিক বৈঠকে সংস্থার ইএসজি-র প্রধান ক্রিস্টোফার রাইটস বলেছেন, আদানি গোষ্ঠীর কাজকর্মের উপর আমরা অনেক দিন ধরে নজর রেখেছি। যে সব ক্ষেত্রে তাদের বিনিয়োগ রয়েছে সেখানে পরিবেশ সংক্রান্ত ঝুঁকি রয়েছে। এই ঝুঁকির কারণে আমরা ক্রমশ বিনিয়োগ কমিয়েছি। এবং এখন আদানি গোষ্ঠীতে নরওয়ে সোভরেন ওয়েল্থ ফান্ডের আর কোনও বিনিয়োগ নেই। উল্লেখ্য, আদানি গোষ্ঠীতে নরওয়ের সংস্থার সাড়ে ১৬ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ ছিল। সেই তুলনায় আদানি গোষ্ঠীতে এসবিআই ও এলআইসির ঋণ বা বিনিয়োগ রয়েছে অনেক বেশি। স্টেট ব্যাঙ্কের ২১ হাজার কোটি টাকার ঋণ রয়েছে আদানি গোষ্ঠীতে। এলআইসির বিনিয়োগের পরিমাণ ৩৭ হাজার কোটি টাকা।
প্রশ্ন হল, নরওয়ে সোভরেন ওয়েলথ ফান্ড যখন আদানি গোষ্ঠীতে বিনিয়োগের উপর আস্থা রাখতে পারছে না, তখন স্টেট ব্যাঙ্ক বা এলআইসি ঝুঁকি নিচ্ছে কেন? প্রসঙ্গত, স্টেট ব্যাঙ্ক ও এলআইসি বারবারই তাদের উপভোক্তাদের আশ্বস্ত করতে চেয়েছে যে তাঁদের টাকার কোনও ঝুঁকি নেই। ওই ঋণ বা বিনিয়োগ সুরক্ষিত রয়েছে। তা ছাড়া তাঁদের মোট সম্পদের তুলনায় আদানিতে বিনিয়োগ বা ঋণের পরিমাণ কিছু নয় বলে দাবি করেছে স্টেট ব্যাঙ্ক ও এলআইসি। কিন্তু পাল্টা প্রশ্নও উঠছে তাদের উদ্দেশে। তা হল, বিশ্বের তাবড় ওয়েল্থ ফান্ড যখন ঝুঁকি কমাচ্ছে তখন স্টেট ব্যাঙ্ক বা এলআইসি কেন এত প্রত্যয় দেখাচ্ছে!