পিতামহ দ্বারকানাথ ঠাকুর ছিলেন মহারাজ কৃষ্ণকিশোর মাণিক্যের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আর রাজপরিবারের সঙ্গে এ হেন সুসম্পর্ক থাকার সুবাদে মোট সাতবার ত্রিপুরায় এসেছেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর৷ সেই ত্রিপুরাতেই চলতি বিধানসভা ভোটে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছেন বিশ্বকবি। শাসক দল হোক বা বিরোধী, ভোট প্রচারে বারবার উল্লেখ করেছেন কবিগুরুর নাম৷ সংস্কৃতি বা হেরিটেজকে ইস্যু করেছে ত্রিপুরার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। আর তারই মাঝে উঠে এসেছে কুঞ্জবনের নাম।
রাজাদের এই প্রাসাদে একসময় থেকেছেন রবি ঠাকুর। আর আজ সেখানে গিয়ে পৌঁছলে দেখা যাবে, বাড়ি সম্পূর্ণ ভগ্নপ্রায়। ধূলোর মোটা আস্তরণ জমে গেছে। কোথাও ভাঙা জানলা। কোথাও আবার বারান্দা ঝুলে পড়েছে ৷ রংচটা সেই প্রাসাদ দেখলে কে বলবে এই বাড়ির ঐতিহাসিক গুরুত্ব। বাড়ির সামনের অংশ এখন বিয়েবাড়ি হিসাবে ভাড়া দেওয়া হয়। তাদের রঙিন কাপড় বাড়ির ভগ্নপ্রায় দশাকে আরও বেশি করে মনে করিয়ে দেয়৷ বাড়ির মালিকানা এখনও রাজপরিবারের হাতে রয়েছে বলেই দাবি স্থানীয়দের৷
প্রসঙ্গত, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সর্বপ্রথম ১৩০৬ বঙ্গাব্দে আগরতলায় আসেন। রবীন্দ্রনাথের মহারাজ বীরচন্দ্রের আমল থেকে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে ত্রিপুরার যোগাযোগ শুরু হয়েছিল। বিশ্বকবি সাত বার আগরতলায় আসেন ৷ ত্রিপুরার রাজার সঙ্গে এবং রাজবংশের সঙ্গে কবিগুরুর সম্পর্ক দারুণ ছিল। মহারাজ বীরচন্দ্র , রাধাকিশোর , বীরেন্দ্রকিশোর এবং বীরবিক্রমের সঙ্গে কবিগুরুর গভীর সম্পর্ক ছিল। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন তৎকালীন মহারাজাদের শিক্ষা-সংস্কৃতি , সংগীত , নৃত্যকলা প্রসারে শুভ ও সৎ পরামর্শ দিতেন। ত্রিপুরায় আসলেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থাকতেন যে কয়েকটি জায়গায়, তার মধ্যে অন্যতম ‘কুঞ্জবন’। আর সেটাউ কিনা এখন বিয়েবাড়ি হিসেবে ভাড়া দেওয়া হয়।