প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণের মাধ্যমে রাজকোষ ভরতে চাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগিয়েছিল মোদী সরকার। দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসে সেই কাজ পুরো দমে শুরু করছে তারা। কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণ ও বেসরকারিকরণ নিয়ে ঢাক পেটালেও তা থেকে আশানুরূপ আয় হয়নি। সে কারণেই মোদী সরকারকে একশো দিনের কাজের প্রকল্প, সামাজিক কল্যাণের মতো বিভিন্ন প্রকল্প থেকে শিক্ষা, স্বাস্থ্যে বরাদ্দ কমাতে হয়েছে বলে ব্যাখ্যা দিচ্ছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ বুধবার বাজেট পেশের পর থেকে বিরোধীরা সামাজিক ক্ষেত্রে বরাদ্দ কমানো নিয়ে কেন্দ্রকে নিশানা করছে।
এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের সাফাই, পরিকাঠামোয় খরচ বাড়াতে গিয়েই সামাজিক ক্ষেত্রে খরচ কমাতে হয়েছে। কারণ, অর্থমন্ত্রীকে রাজকোষ ঘাটতি কমাতে হয়েছে। তাঁর আশামতো বিলগ্নিকরণ থেকে আয়ও হয়নি। চলতি অর্থ বছরে বিলগ্নিকরণ থেকে ৬৫ হাজার কোটি টাকা ঘরে তোলার লক্ষ্য ছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মাত্র ৩১,১০৬ কোটি টাকা ঘরে এসেছে। তাই চলতি বছরের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৫০ হাজার কোটি টাকা করে আগামী বছরের জন্যও ৫১ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ রথীন রায়ের মত, গত চার বছর ধরে কেন্দ্র রাজস্ব খাতে আয় বাড়াতে পারছে না। গত সাত বছর ধরে কর-সহ রাজস্ব খাতে আয় জিডিপি-র ৭ শতাংশে আটকে রয়েছে। এ দিকে সরকারের অগ্রাধিকার হল পরিকাঠামোয় ব্যয়। বাজেট থেকে পরিকাঠামোয় ব্যয় বাড়লেও পরিকাঠামোয় মোট ব্যয় বাড়ছে না। কারণ, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি পরিকাঠামোয় যথেষ্ট খরচ করতে পারছে না। সেই অভাব কেন্দ্রীয় সরকারকে পূরণ করতে হচ্ছে। তার জন্য খাদ্য, সার, পেট্রোপণ্যে ভর্তুকিতে খরচ ছাঁটাই করতে হয়েছে। কিন্তু সেখানে খরচ বাঁচিয়ে সরকার যে একশো দিনের কাজ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যে টাকা ঢালতে পেরেছে এমন নয়।