সোমবার কলকাতা বইমেলার উদ্বোধন সেরেই বীরভূমের উদ্দেশ্যে রওনা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি পৌঁছে যান শান্তিনিকেতনে প্রতীচীতে। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মমতা। তাঁর কাছে জমির নথি হস্তান্তরের পর, বাড়ির সামনে দাঁড়িয়েই সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর কড়া ভাষায় তোপ দাগেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। প্রতীচীর সামনে দাঁড়িয়ে মমতা বলেন, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে যাতে কেউ কোনওভাবে বিরক্ত করতে না পারে, সেটা দেখা সরকারের কর্তব্য ও দায়িত্ব। “অমর্ত্য সেনকে শ্রদ্ধা জানাতেই আমি এসেছিলাম। অমর্ত্য সেনের যেন কোনও সমস্যা না হয়। জমির কাগজ নিয়ে এসেছি। তথ্যের উপর ভিত্তি করে সত্য বলতে চাই। সত্য জানাতেই এখানে ছুটে আসা। অসম্মানের বদলে সম্মান জানাতে নথি দিলাম। জমির প্রকৃত নথি অমর্ত্য সেনকে তুলে দিলাম”, জানান মুখ্যমন্ত্রী।
পাশাপাশি মমতা আরও বলেন, “বিশ্বভারতীকে রবীন্দ্রনাথের চোখে দেখি। বিশ্বভারতীকে গৈরিকীকরণের চোখে দেখি না। অশ্রদ্ধা করা কিছু লোকেদের অভ্যাস। জমির ভান্ডার থেকে জমি দেওয়া হয়েছিল বিশ্বভারতীকে। ১৯৮৪-এর পরের ল্যান্ড রেভিনিউ রিপোর্ট অনুযায়ী, যে জমিটা লিজে দেওয়া হয়েছিল তার পরিমাণ ১.৩৮ একর। এখন বিশ্বভারতীর দাবি, ১.২৫ একর জমি লিজে রাখার কথা! সেখানে অমর্ত্য সেন আরও ১৩ ডেসিমেল ছবি অধিগ্রহণ করে রেখেছেন!” এরপরই হিসব কষে মমতা বুঝিয়ে দেন, বিশ্বভারতীর দাবি ভুল। কারণ রাজ্য সরকারের জমি রাজস্ব দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী-ই অমর্ত্য সেনের নামে ১৩৮ ডেসিমেল জমি রয়েছে। মমতা প্রশ্ন তোলেন, “অমর্ত্য সেনকে অপমান করা হচ্ছে না কেন?” একইসঙ্গে বিশ্বভারতীর কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে কড়া বার্তা দেন তিনি। “কথায় কথায় পড়ুয়াদের অপমান করবেন না”, বলেন মমতা। প্রসঙ্গত, এদিন অমর্ত্য সেনের বাড়িতে যাওয়ার আগে সকালে বোলপুরে বিএলআরও অফিসে পৌঁছে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বাড়িতে আসার পর তাঁকে চা-পানের অনুরোধ করেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। অমর্ত্য সেনের সঙ্গে জমি নিয়ে আলোচনা করেন মমতা। প্রতীচীতে বসেই অমর্ত্য সেনকে জেড প্লাস ক্যাটেগরি দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে অমর্ত্য সেনের নিরাপত্তায় বাড়ির বাইরে ক্যাম্পের বন্দোবস্ত করার কথাও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।