অবশেষে সমাপন ঘটল ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র। ২০২২-এর ৭ই সেপ্টেম্বর কন্যাকুমারী থেকে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের এই দীর্ঘ পদযাত্রা শুরু হয়েছিল। সোমবার শ্রীনগরে প্রবল তুষারপাতের মধ্যে রাহুলের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে সমাপ্তি হল ঐতিহাসিক যাত্রার। সমাপ্তি অনুষ্ঠানে কংগ্রেসের তরফে ২১টি বিরোধী দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তাদের মধ্যে অনেককেই উপস্থিত থাকতে দেখা গেল। প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেও রাহুল গান্ধীকে কেন্দ্র করে কাশ্মীরবাসীর মধ্যে দেখা গেল প্রবল আবেগ। নিজের বক্তব্যে রাহুল জানালেন, এই যাত্রা তাঁকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। ১৪৫ দিনের দীর্ঘ যাত্রায় ১২টি রাজ্য এবং দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে দিয়ে হেঁটেছেন রাহুল। জনসংযোগ গড়ে তুলেছেন। কন্যাকুমারী থেকে শ্রীনগর পর্যন্ত মোট ৩,৯৭০ কিলোমিটার পথ হেঁটেছেন কংগ্রেস নেতা। সমাপ্তি অনুষ্ঠানে নিজের সেই অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে বলেন, “যাত্রার শুরু দিকে একদিন পায়ে খুব ব্যথা পাই। কিন্তু একটি অল্পবয়সী মেয়ের চিঠি তাঁকে বদলে দেয়। ব্যথা অদৃশ্য হয়।” এখানেই থেমে থাকেননি কংগ্রেস নেতা। “অনেক কিছু শিখলাম। একদিন খুব কষ্ট হচ্ছিল। ভাবছিলাম আরও ৬-৭ ঘণ্টা হাঁটতে হবে এবং বিষয়টা কঠিন। কিন্তু এক তরুণী আমার কাছে ছুটে এসে বলে যে সে আমার জন্য কিছু লিখেছে। এবং চলে যায়”, জানিয়েছেন রাহুল।
পাশাপাশি রাহুল জানান, ওই তরুণী চিঠিতে লেখেন, “আমার পক্ষে আপনার সঙ্গে হাঁটা সম্ভব নয়। কিন্তু হৃদয় থেকে আপনার পাশে হাঁটছি। যেহেতু জানি যে আপনি আমার ভবিষ্যতের জন্য হাঁটছেন।” কংগ্রেস নেতা আরও বলেন, “যাত্রাকালীন দেশকে আরও কাছ থেকে চেনার সুযোগ হয়েছে। জাত-ধর্মের ঊর্ধ্বে একতার কথা বলেন। বিরোধীদের সঙ্গে নিয়ে চলারও বার্তা দেন। এদিন ‘শের-ই-কাশ্মীর’ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিজের বক্তব্যের আগে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন রাহুল। সমাপ্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডিএমকে, এনসি, পিডিপি, সিপিআই, আসএসপি, আইইএমএল এবং বিএসপি এমপি-র প্রতিনিধিরা। এদিন মেজাজেই দেখা গিয়েছে কংগ্রেস নেতাকে। বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সঙ্গে বরফ নিয়ে খুনসুটিতেও মেতে উঠতে দেখা যায় তাঁকে। এদিকে যাত্রায় ভাল সাড়া পাওয়া গিয়েছে বলেই দাবি করেছে কংগ্রেস নেতৃত্ব। উল্লেখ্য, পাঁচ মাসের যাত্রায় রাহুলের সঙ্গে হেঁটেছেন সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ। পা মিলিয়েছেন বিশিষ্টরাও। ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে রাহুলের নেতৃত্বে কংগ্রেসের এই কর্মসূচী অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
