দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ইতিহাস গড়ল ভারতের মেয়েরা। মহিলাদের প্রথম অনূর্ধ্ব ১৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের খেতাব এল দেশে। রবিবার ফাইনালে ইংল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারাল ভারত। প্রথমে ব্যাট করে ১৭.১ ওভারে ৬৮ রান করে ইংল্যান্ড। ১৪ ওভারে ৩ উইকেটে হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যান শেফালি বর্মারা। উল্লেখ্য, গত বছর ফেব্রুয়ারিতে ছেলেদের অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। অর্থাৎ, বছর ঘোরার আগেই ক্রিকেটের আরও একটি বিশ্বকাপ জিতে নিল টিম ইন্ডিয়া। ফাইনালে দাপট দেখালেন ভারতীয় বোলাররা। বোলিং আক্রমণের নেতৃত্ব দিলেন বাংলার ফাস্ট বোলার তিতাস সাধু। টস জিতে ইংল্যান্ডকে ব্যাট করতে পাঠান ভারতীয় দলের অধিনায়ক শেফালি। নতুন বল হাতে দুই ফাস্ট বোলারই ইংল্যান্ডের ব্যাটিংয়ে ধস নামালেন। তিতাসের সুইং সামলাতে হিমশিম খেলেন ইংল্যান্ডের ব্যাটাররা। ৪ ওভার বল করে মাত্র ৬ রান খরচ করে ২ উইকেট তুলে নিলেন তিতাস। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ওভার প্রতি মাত্র ১.৫ রান খরচ করলেন হুগলির চুঁচুড়ার বাসিন্দা। প্যাভিলিয়নে ফেরালেন ওপেনার লিবার্টি হিপ (০) এবং চার নম্বরে নামা উইকেটরক্ষক-ব্যাটার সেরেন স্মেলকে (৩)। পাশাপাশি ইংল্যান্ডের ব্যাটারদের অস্বস্তিতে রাখলেন অর্চনা দেবীও। তিনি আউট করলেন তিন নম্বরে নামা নিমাহ হল্যান্ড (১০) এবং ওপেনার তথা অধিনায়ক গ্রেস ক্রিভেন্সকে। ভাল বল করলেন পার্শ্ববী চোপড়া। ১৩ রান দিয়ে ২ উইকেট নিলেন তিনি। রিয়ানা ম্যাকডোনাল্ড-গে (১৯) এবং চেরিস পাভেলিকে (২) আউট করলেন তিনি। একটি করে উইকেট পেলেন শেফালি বর্মা, সোনম যাদব এবং মন্নত কাশ্যপরা।
প্রাথমিক বিপর্যয়ের পর ম্যাচে ফেরার জন্য কোনও জুটিই তৈরি করতে পারেনি ইংরেজরা। মাত্র ৫৩ রানেই ৮ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। শেষ পর্যন্ত ৬৮ রানে গুটিয়ে গেল তারা। দলের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংস খেললেন স্টোনহাউস এবং সোফিয়া স্মেল। দু’জনের ব্যাট থেকেই এল ১১ রান করে। কম রানের লক্ষ্য হলেও ভারতের ইনিংসের শুরুটা তেমন ভাল হয়নি। অধিনায়ক শেফালি ভাল শুরু করেও দ্রুত আউট হয়ে যান। ওপেন করতে নেমে শেফালি করলেন ১১ বলে ১৫ রান। তাঁর ব্যাট থেকে এল একটি করে চার এবং ছয়। আর এক ওপেনার শ্বেতা সেহরাওয়াতও ৫ রান করে আউট হলেন। একটি চার মারলেন তিনি। ভারতীয় ইনিংসকে নির্ভরতা জোগাল তৃতীয় উইকেটে সৌম্যা তিওয়ারি এবং গোঙ্গাদি তৃষার জুটি। জয়ের লক্ষ্য বড় না থাকায় দু’জনেই ঝুঁকি না নিয়ে ব্যাট করার চেষ্টা করলেন। ঠাণ্ডা মাথায় এগিয়ে নিয়ে গেলেন ইনিংসকে। ২০ রানে ভারত ২ উইকেট হারানোর পর সৌম্যা-গোঙ্গাদির জুটিতে ধীরে ধীরে জয়ের রাস্তায় হাঁটতে শুরু করল ভারত। প্রথম ১০ ওভারে উঠল ৪৮ রান। পরের ১০ ওভারের জন্য ভারতের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২১ রান। এরপর গোঙ্গাদি ২৪ রান করে যখন সাজঘরে ফিরলেন, তখন ভারত জয় থেকে মাত্র ৩ রান দূরে। ২৯ বলে ২৪ রান করেন গোঙ্গাদি। মারলেন তিনটি বাউন্ডারি। শেষ পর্যন্ত সৌম্যা অপরাজিত থাকলেন ২৪ রান করে। তাঁর ৩৭ বলে ইনিংসটি সাজানো তিনটি চারের সাহায্যে। শেষ পর্যন্ত সৌম্যার সঙ্গে উইকেটে ছিলেন হৃষিতা বসু (অপরাজিত ০)। ইংল্যান্ডের সফলতম বোলার অ্যালেক্সা স্টোনহাউস ৮ রানে ১ উইকেট নিলেন। একটি করে উইকেট পেয়েছেন হান্না বেকার এবং গ্রেস স্ক্রিভান্স। ফাইনালে অনবদ্য বোলিংয়ের জন্য বাংলার তিতাসকেই ম্যাচের সেরা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়। টুর্নামেন্টের সেরা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ইংল্যান্ডের গ্রেস ক্রিভেন্স।
