আর বেশি দেরি নেই। সামনেই বিধানসভা নির্বাচন ত্রিপুরায়। উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে নিজেদের গদি টিকিয়ে রাখতে মরিয়া বিজেপি। তবে ভোটের প্রাকলগ্নে ফের অস্বস্তিতে পড়ল তারা। ত্রিপুরায় গোষ্ঠীকোন্দলে জেরবার পদ্মশিবিরের অন্দরমহল। কিছুতেই এই সমস্যা মেটাতে পারছে না দিল্লীর নেতৃত্ব। আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগে এই অন্তর্দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হয়ে উঠছে। ভোটের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হতেই বিদ্রোহ শুরু হয়েছে গেরুয়া-পরিবারে। এদিন চণ্ডীপুরে পুড়ল দলীয় কার্যালয়। ভাঙচুর চলল একাধিক বুথ অফিসে। ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে কৈলাশহর, বাগবাসা-সহ একাধিক বিধানসভা কেন্দ্রে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন বিজেপির প্রদেশ মুখপাত্র সুব্রত চক্রবর্তী। “কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটে থাকলে সেটা দুঃখজনক। কারওর মুখ নয়, পদ্মফুলকে সামনে রেখেই আমাদের লড়াই”, জানিয়েছেন তিনি। ত্রিপুরায় বিধানসভা আসন ৬০টি। তবে, শনিবার দিল্লী থেকে ৪৮টি আসনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে পদ্মশিবির।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রবল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে প্রাথমিকভাবে ১২টি আসনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতে পারেনি বিজেপি। তবে রাতের দিকে আরও ছয় আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়। আরও একটি আসনে প্রার্থী খুঁজছে বিজেপি। পাঁচটি আসন তারা ছেড়ে রেখেছে প্রাক্তন জোটসঙ্গীর জন্য। এদিকে, বিজেপি প্রার্থীদের নাম জানাজানি হতেই ত্রিপুরার নানাপ্রান্তে ছড়ায় উত্তাপ। সবচেয়ে বেশি চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে ঊনকোটি জেলার চণ্ডীপুর কেন্দ্রে। এখানে দলীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ভাঙচুর করা হয় ভগবাননগর, গৌরনগর ও কাউলিকুড়ার বুথ অফিসে। এই কেন্দ্রে টিঙ্কু রায়কে টিকিট দিয়েছে পদ্মশিবির। যা দলের একটা বড় অংশ মেনে নিতে নারাজ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশাল পুলিস বাহিনী নিয়ে আসেন এডিপিও ধ্রুব নাথ। মোতায়েন করা হয় আধা সেনা। দলবদলকারী বাম বিধায়ক মবসসর আলিকে টিকিট দেওয়া নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ বিজেপির একাংশ। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ছুটে যান কৈলাশহর থানার ওসি সঞ্জীব লস্কর। শুক্রবার গেরুয়াশিবিরে নাম লিখিয়েছিলেন মবসসর। পরের দিনই প্রার্থী তালিকায় জায়গা পেয়েছেন তিনি। ওই একই দিনে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন সুবল ভৌমিক। তিনি প্রার্থীপদ না পাওয়ায় রাগে ফুঁসছেন সুবল অনুগামীরা। সবমিলিয়ে ভোটের আগে এহেন পরিস্থিতি স্বাভাবিকভাবেই মাথাব্যথা বাড়াচ্ছে ত্রিপুরার গেরুয়া-নেতৃত্বের।