আমেরিকার লগ্নি সংক্রান্ত গবেষণাকারী সংস্থা ‘হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ’ সম্প্রতি জানিয়েছে জালিয়াতি করে নিজেদের সংস্থার শেয়ার দর বাড়িয়েছে ভারতের আদানি গোষ্ঠী। যার পরই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। রাতারাতি মুখ থুবড়ে পড়ছে আদানি গোষ্ঠীর সংস্থাগুলির শেয়ার। হুড়মুড় করে নেমেছে সেনসেক্সও। বিদেশি সংস্থার রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর বিত্তবানদের তালিকায় ধাক্কা খেয়েছেন দেশের অন্যতম নামী শিল্পপতি গৌতম আদানি। বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় ৪ ধাপ নেমে সপ্তম স্থানে চলে এসেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, আমেরিকার ওই সংস্থার তরফে দাবি করা হয়েছে, কারচুপি করে নিজেদের সংস্থাগুলির শেয়ার দর বাড়িয়েছে আদানি গোষ্ঠী। এ নিয়ে দু’বছর ধরে তদন্ত চালিয়ে তারা এই তথ্য জানতে পেরেছে বলে দাবি করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, গত এক দশক ধরে নিজেদের সংস্থাগুলির শেয়ারের দাম কৃত্রিম ভাবে বাড়িয়েছে আদানি গোষ্ঠী। গত ৩ বছরে কারচুপির মাধ্যমে গৌতম আদানির ১২ হাজার কোটি ডলারের নিট সম্পদের ১০ হাজার কোটি এসেছে।
আমেরিকার সংস্থার রিপোর্টে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগও করা হয়েছে। মরিশাস, আরব আমিরশাহির মতো কিছু দেশে আদানি পরিবারের মালিকানাধীন কিছু ভুয়ো সংস্থার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও আমেরিকার সংস্থার রিপোর্ট ভিত্তিহীন বলে আদানিরা সরব হয়েছে। তবে তাদের শেয়ারের দাম মুখ থুবড়ে পড়ছে। গত বুধ এবং শুক্রবার আদানি গোষ্ঠীর সংস্থাগুলির শেয়ারমূল্য কমেছে ৪.১৭ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি।
শুক্রবার আদানি টোটাল গ্যাস খুইয়েছে ৭৯ হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা। আদানি গ্রিন এনার্জি খুইয়েছে ৫৭ হাজার ৮৭৬ কোটি টাকা। আদানি ট্রান্সমিশনও ধাক্কা খেয়েছে। তারা খুইয়েছে ৫২ হাজার ৫৩১ কোটি টাকা। অন্যদিকে, আদানি টোটাল গ্যাস, আদানি গ্রিন এনার্জি, আদানি ট্রান্সমিশনের শেয়ার দর পড়েছে ২০ শতাংশ। আদানি এন্টারপ্রাইজের শেয়ার দর পড়েছে ১৮.৫২ শতাংশ। আবার, আদানি পাওয়ার এবং আদানি উইলমারের শেয়ার দর পড়েছে ৫ শতাংশ। আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোনের শেয়ার দর পড়েছে ২৩ শতাংশ।
আমেরিকার সংস্থার রিপোর্টের জেরে শুক্রবার আদানি এন্টারপ্রাইজের শেয়ার বিক্রির প্রক্রিয়া মুখ থুবড়ে পড়েছে। ৪.৫৫ কোটি শেয়ার বেচতে নেমেছিল তারা। কিন্তু বিক্রি করেছে মাত্র ৪.৭ লক্ষ। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে খবর, হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার আগেই গৌতম আদানির মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১২ হাজার ১০০ কোটি ডলার থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৯৬৬০ কোটি ডলার। এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর আরও ধাক্কা খেলেন আদানি।