আজ ভারতের ৭৪তম সাধারণতন্ত্র দিবস। সেই
প্রতীক্ষার অবসান। সেই উপলক্ষ্যে রাজধানী দিল্লীতে আয়োজিত হল কুচকাওয়াজ। আর সেখানেই অভিনব দৃষ্টান্ত রাখল বাংলা। প্রদর্শিত হল বাংলার ট্যাবলো। যার বিষয় ‘মা দুর্গা ও নারী শক্তির ক্ষমতায়ান’। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিশেষজ্ঞ কমিটি রাজ্যের এই নয়া ভাবনার ট্যাবলোকে অনুমোদন করেছে। এই অনুমোদনের খবর নবান্নে আগেই এসে পৌঁছেছিল। যদিও অনুমোদন দেওয়ার আগে একটি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছিল। বিশেষজ্ঞ কমিটি মনে করলে কুচকাওয়াজের আগের দিন শেষ লগ্নে বাতিল করে দিতে পারে। গত বছরই দিল্লীর প্রজাতন্ত্র দিবসে নেতাজী সুভাষ চন্দ্রের ১২৫ বছরের জন্মবার্ষিকীতে তৈরি বাংলার ট্যাবলো বাতিল করে দিয়েছিল কেন্দ্র। এ নিয়ে তুঙ্গে উঠেছিল রাজনৈতিক শোরগোল। এবারের ট্যাবলোর স্বপরিবারে-লক্ষ্মী, গণেশ, সরস্বতী, কার্তিককে নিয়ে এক চিত্রে মা দুর্গার অবস্থান। ট্যাবলোর অগ্রভাগে একটি কলাগাছের দু’ধারে দুই মহিলা শঙ্খ বাজিয়ে মহাশক্তির আগমণীর বার্তা দিচ্ছেন। আর মাকে ঘিরে রয়েছেন মহিলারা। ঢাক, কাঁসর ঘণ্টা বাজিয়ে বরণ করছেন। লক্ষ্য, জগত সৃষ্টির মূলে ‘মা’ অর্থাৎ নারী শক্তি।
উল্লেখ্য, দুর্গোৎসব শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়। জাতি, বর্ণ, ধর্ম নির্বিশেষে সমস্ত মানুষের একটা উৎসবে রূপান্তরিত হয়েছে। এটাই বিশ্বের সামনে তুলে ধরা। প্রসঙ্গত, ইউনেস্কো ২০২১ সালের ডিসেম্বরে কলকাতার দুর্গা পুজোকে ইনট্যানজেবিল হেরিটেজ মর্যাদা দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইউনেস্কোর এই স্বীকৃতিকে স্মরণ করতে গতবারেই দুর্গা পুজোকে ঘিরে এক মাস ধরে রাজ্য জুড়ে উৎসবের আয়োজন করেছিলেন। কার্নিভালের মধ্যে দিয়ে যার সমাপ্তি হয়। সূত্রের খবর, শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি জগতের বিশিষ্ট জনেদের নিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করেন। তাঁরাই বিভিন্ন সময় ট্যাবলোর রূপরেখা দেখে বিচার বিশ্লেষণ করে নির্বাচিত করেন। এর জন্য অনেক সময়ই ট্যাবলোর রূপরেখার কিছুটা পরিবর্তন করার সুপারিশও করা হয় বিশেষজ্ঞ কমিটি থেকে। যেমন এবার বাংলার ট্যাবলোর ক্ষেত্রে হয়েছিল। প্রথমে এই ট্যাবলোর অগ্রভাগে মঙ্গলঘট বসানো হয়েছিল। বিশেষজ্ঞ কমিটি মঙ্গলঘটের বদলে কলাগাছ ও দুই মহিলা শাঁখ বাজাচ্ছেন এমন দৃশ্য রাখার প্রস্তাব দেয়। রাজ্য সরকার তা মেনে নিয়ে নতুন করে রূপরেখা পেশ করে। তারপরই অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞ কমিটি।