পদ্ম পুরস্কার আসলে রাজনীতির হাতিয়ার।এই অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এই অভিযোগে বহু স্বনামধন্য পদ্মপ্রাপক এই পুরস্কার প্রত্যাখ্যানও করেছেন। বিরোধীদের অভিযোগ বিজেপির আমলে সরকারি এই সম্মানকে অনেক বেশি বেশি করে রাজনীতির সুবিধা পেতে ব্যবহার করা হচ্ছে। এবছরও পদ্ম তালিকায় এমন কিছু নাম রয়েছে, যারা সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আছেন বা ছিলেন। অঙ্ক কষেই এদের রাখা হয়েছে পদ্ম তালিকায়।
মুলায়ম সিং যাদব: সমাজবাদী পার্টির প্রতিষ্ঠাতাকে এবছর মরণোত্তর পদ্মবিভূষণ দেওয়া হচ্ছে। মুলায়ম দেশের সবচেয়ে সম্মানিত ওবিসি নেতাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। এ বছর দেশের ৯ রাজ্যে ভোট। স্বাভাবিকভাবেই ওবিসি ভোটে নজর রয়েছে গেরুয়া শিবিরের। ৯ রাজ্যের নির্বাচনের আগে সরকার বুঝিয়ে দিতে চাইল, দলমত নির্বিশেষে অবিসিদের সম্মান করে বিজেপি। তাছাড়া মুলায়মের ছেলে অখিলেশ এই মুহূর্তে উত্তরপ্রদেশের সবচেয়ে শক্তিশালী বিরোধী দল। বাবাকে পদ্মবিভূষণ দিয়ে তাঁকেও ঘুরিয়ে বন্ধুত্বের বার্তা দেওয়া হল। বলা তো যায় না, কখন কাকে দরকার পড়ে।
এস এম কৃষ্ণ: কর্ণাটকের প্রবীন ভোক্কালিগা নেতা এস এম কৃষ্ণকে এবছর পদ্ম সম্মান দেওয়া হচ্ছে। কৃষ্ণ সরাসরি বিজেপির সঙ্গে যুক্ত। চলতি মাসেই রাজনীতি থেকে অবসর নিয়েছেন তিনি। তাঁর আগে পর্যন্ত ছিলেন বিজেপি নেতা। আসলে এ বছর কর্ণাটকে নির্বাচন। ভোক্কালিগা সম্প্রদায় সেরাজ্যের নির্বাচনে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। তাই কৃষ্ণকে সম্মান দিয়ে আসলে ভোক্কালিগাদের কাছে টানার চেষ্টা করছে গেরুয়া শিবির।
এনসি দেববর্মা: আগামী মাসেই ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচন। সেরাজ্যে বিজেপি এখন বেশ চাপে। বিশেষ করে উপজাতি এলাকায় ত্রিপুরার মহারাজ প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মার দল তিপ্রা মথা ভাল বেগ দিতে পারে গেরুয়া শিবিরকে। তার আগে আরেক প্রভাবশালী উপজাতি নেতা এনসি দেববর্মাকে পদ্মশ্রী দিয়ে মাস্টারস্ট্রোক দিল গেরুয়া শিবির। অনেকে মনে করছেন, এনসিকে মরণোত্তর সম্মান দিয়ে উপজাতিদের নিজেদের দিকে টানার চেষ্টা করছে গেরুয়া শিবির।
থউনাউজাম চাওবা সিং: বিজেপির ‘লুক ইস্ট’ নীতির ফসল। প্রাক্তন এই কংগ্রেস নেতা এখন বিজেপির মণিপুরের রাজ্য সভাপতি। গতবছর বিজেপি যখন সেরাজ্যে ভাল ফল করল, তখন মুখ্যমন্ত্রিত্বের দৌড়ে ছিলেন চাওবাও। যদিও শেষপর্যন্ত বীরেন সিং তাঁকে হারিয়ে মণিপুরের কুরসি দখল করেন। তখন থেকেই অসন্তুষ্ট ছিলেন থউনাউজাম চাওবা সিং। তাঁকে পদ্ম সম্মান দিয়ে খুশি করল বিজেপি।