স্বাস্থ্যক্ষেত্রে অভিনব পদক্ষেপ নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এবার রাজ্যে
চিকিৎসা সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে যাবতীয় অভাব-অভিযোগের নিরাময় করতে জনতার দোরে দোরে পৌঁছে যাবে স্বাস্থ্য কমিশন। কমিশনের কাছে অভিযোগ জানাতে কলকাতায় তাদের অফিসে ছুটে আসতে হবে না জেলার কোনও রোগী বা তাঁর পরিবার-পরিজনদের। উল্টে, অভিযোগের সুরাহা করতে জেলায় জেলায় ঘুরবেন কমিশনের কর্তারা। ফোন করে চিকিৎসা সংক্রান্ত অভিযোগ জানানোর বন্দোবস্ত করতে শীঘ্রই একটি কলসেন্টার তৈরি করবে কমিশন। সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল, চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে রোগী ফেরানো হলে অথবা উপযুক্ত চিকিৎসা পরিষেবা না পেলে ওই কলসেন্টারের মাধ্যমে কমিশনের কাছে নিজেদের অভিযোগ পৌঁছে দিতে পারবেন রোগী বা তাঁর আত্মীয়-পরিজনেরা।
প্রসঙ্গত, এই বিষয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে বলে কমিশন সূত্রে খবর। রাজ্য জুড়ে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ল্যাব মিলিয়ে স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার জন্য মোট সাড়ে ৫ হাজার লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। ওই চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলি ঠিক ভাবে কাজ করছে কি না, তাতেও নজরদারি চালাবে কমিশন। পাশাপাশি, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরিষেবার সুস্থ সমন্বয় ঘটাতেও সক্রিয় কমিশনের কর্তারা। ছোট বেসরকারি হাসপাতালগুলির বাইরে কমিশনের নির্দেশিকা ফ্লেক্স আকারে লাগানোর পরিকল্পনাও রয়েছে। প্রয়োজনে বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে পরিদর্শন করবেন কমিশনের কর্তারা। চিকিৎসাজনিত অভিযোগের পর অভিযোগকারীরা কমিশনের রায়ে সুফল পেয়েছেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখতে চায় কমিশন।
উল্লেখ্য, আগামী ৭ ও ৮ই ফেব্রুয়ারি মালদহের চাঁচলে কমিশনের প্রথম বৈঠক হবে। এই জেলায় এর আগে স্বাস্থ্যসাথী নিয়ে ৬টি অভিযোগের রায়দান করেছে কমিশন। সেই অভিযোগকারীরা আর্থিক ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি, এ বিষয়ে কোনও খামতি থাকলে তার নিষ্পত্তিও করা হবে। অন্য দিকে, মালদহের দিনাজপুরের বেসরকারি হাসপাতাল এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির সঙ্গে আলোচনা করে পরিষেবা সংক্রান্ত অভিযোগ কমাতে সম্ভাব্য পদক্ষেপের পথও খুঁজবে কমিশন। মালদহের পর পুরুলিয়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে যাবেন কমিশনের কর্তারা। স্বাস্থ্য পরিষেবার নিরিখে রাজ্যকে উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গ, এই দু’টি ভাগে ভাগ করে সমস্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) নিয়ে বৈঠকে বসবেন কমিশনে কর্তারা। দক্ষিণবঙ্গের জন্য ঝাড়গ্রামে ২ এবং ৩ মার্চ বৈঠক হবে। এরপর উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির স্বাস্থ্যকর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসবে কমিশন। স্বাভাবিকভাবেই এই পদক্ষেপকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।