কার্যত মুখ পুড়ল বঙ্গ বিজেপির। শ্যামপুরে দুষ্কৃতীদের মারের জেরে মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে রাজনীতি চান না, সাফ জানিয়ে দিলেন নিহতের স্ত্রী। এদিন হাওড়া গ্রামীণ পদ্ম-নেতৃত্বকে তিনি বলেন, “আমি কোনও রাজনীতি চাই না। আপনাদের যদি ইচ্ছা হয় আমাদের পাশে থাকতে পারেন।” এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার বিজেপির হাওড়া গ্রামীণ জেলা কমিটির পক্ষ থেকে মৃতের পরিবারের সঙ্গেও দেখা করা হয়। মৃতকে তাদের সদস্য বলে দাবি করে বিজেপি নেতৃত্ব। মৃতের স্ত্রীর পাশে থাকার কথাও জানায়। যদিও এ ব্যাপারে মৃতের স্ত্রীর স্পষ্ট বক্তব্য, তিনি কোনও রাজনীতি চান না। এবং তাঁর স্বামীর বিজেপি কর্মী হওয়ার কথাও কার্যত অস্বীকার করেন। “আমি কোনও রাজনীতি চাই না। আপনাদের যদি ইচ্ছা হয় আমাদের পাশে থাকতে পারেন”, জানান তিনি। বিকেলে বিজেপির গ্রামীণ এলাকার পক্ষ থেকে শ্যামপুর মোড় থেকে শ্যামপুর থানা পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। সেখানে শ্যামপুর থানার ওসিকে বদলের দাবি তোলা হয়। থানার সামনে বসে পড়ে অবস্থান বিক্ষোভ দেখান কর্মী-সমর্থকরা। পরে কয়েকজন সদস্য ওসির কাছে স্মারকলিপি জমা দেন। এদিকে হঠাৎই বিজেপি কর্মী সমর্থকরা খেপে গিয়ে থানায় ঢোকার মুখের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করে। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে জুতো ছোঁড়ে তারা।
প্রসঙ্গত, এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার অভিযুক্ত কিল্টন বাগকে গ্রেফতার করা হয়। ওই রাতে আরও এক অভিযুক্ত শান্তনু হাপরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বুধবার সকালে তৃতীয় অভিযুক্ত টিটন বাগকে গ্রেপ্তার করে শ্যামপুর থানার পুলিশ। পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে খুন, চক্রান্ত-সহ পকসো ধারায় মামলা রুজু করে। মৃতের পরিবারের এফআইআরে কিল্টন এবং টিটনের নাম থাকলেও শান্তনুর নাম ছিল না। কিন্তু পুলিশ তদন্তে শান্তনুর নামও জানতে পারে। তাকেও গ্রেফতার করে। জানা গিয়েছে, কিল্টন ও লিটন দুই ভাই এবং শান্তনু কিল্টনের সম্পর্কে শ্যালক হয়।বুধবার হাওড়া গ্রামীণ এলাকার পুলিশ সুপার স্বাতী ভাঙালিয়া গোবিন্দপুর এলাকায় আসেন। শ্যামপুর বাগনান রোড থেকে উত্তর দিকে ঢালাই রাস্তা নেমে গিয়েছে বুড়িতলা স্টপেজ থেকে। সেই রাস্তা থেকে কয়েক কিলোমিটার গেলেই মৃত ও নির্যাতিতার বাড়ি। আর শ্লীলতাহানি এবং নির্যাতিতার বাবাকে খুনের ঘটনাটি ঘটেছে গোবিন্দপুরের খিদিরপুর এলাকায়। পুলিশ সুপার স্বাতী ভাঙ্গালিয়া সংশ্লিষ্ট ঘটনাস্থলের কাছে পরিদর্শন করেন। “আমরা এই ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজনকেই গ্রেপ্তার করেছি। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে”, এমনটাই জানিয়েছেন স্বাতী।