একুশের ভোটযুদ্ধে বিজেপিকে রুখে দিয়ে বাংলায় তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। আর তারপরেই আগামী লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে শুরু হয়েছে অন্যান্য রাজ্যে সংগঠন বিস্তার করে দলকে সর্বভারতীয় স্তরে মেলে ধরার চেষ্টা। আর সেই লক্ষ্যেই এই মুহূর্তে তৃণমূলের পাখির চোখ মেঘালয়। এবার সেখানের বিধানসভা নির্বাচনের জন্য নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। শিলংয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে এই ইস্তেহার প্রকাশিত হল। ইস্তেহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এগুলো কোনও প্রতিশ্রুতি নয়, প্রতিজ্ঞা। যখন কোনও অঙ্গীকার নেওয়া হয়, তখন শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত তা রাখার চেষ্টা করব। প্রত্যেকের স্বাধীনতা রক্ষা করা হবে। মানুষের অধিকার রক্ষা করার অঙ্গীকার নিয়েছে তৃণমূল। এই ইস্তেহার একটি ভিশন। বিশ্বকে আমরা দেখাব মেঘালয়ের মানুষ কী করতে পারেন।’
প্রসঙ্গত, ইস্তেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলির মধ্যে রয়েছে, দরিদ্রমুক্ত মেঘালয় গঠন, ডবল ডিজিটের অর্থনৈতিক উন্নয়ন। নতুন এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যেতের কথাও উল্লেখ রয়েছে তৃণমূলের ইস্তেহারে। ক্ষুদ্র, মাঝারি এবং কুটির শিল্পে চার হাজার নতুন কর্মসংস্থান, বৈজ্ঞানিক এবং স্থায়ী খনি সংস্করণ, কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ৩ লাখ নতুন কর্মসংস্থান, ২১ থেকে ৪০ বছর বয়সী সকলের জন্য মাসিক এক হাজার টাকা ভাতার ঘোষণা রয়েছে ইস্তেহারে। পড়ুয়াদের জন্য এক লাখ ল্যাপটপ, সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে ১ হাজার টাকা করে বৃদ্ধি, ২ লাখ ৮০ হাজার প্রার্থীর স্কিল ট্রেনিং, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাকে ঢেলে সাজানো, নতুন মেডিক্যাল কলেজ তৈরি, রাস্তাঘাট, পানীয় জল, পরিকাঠামোর উন্নয়ন, ১০০ শতাংশ গৃহে পানীয় জল, সমস্ত গ্রামে বিদ্যুৎ এবং রাস্তা তৈরির প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে।
এর পাশাপাশি শিলং রিং রোড দ্রুত তৈরি করা হবে বলেও জানান অভিষেক। পাশাপাশি ব্লক লেভেল থেকে প্রতিভাবান খেলোয়াড় তুলে আনা, আগামী পাঁচ বছরে প্রতিটি জেলায় স্টেডিয়াম , স্পোর্টস ক্লাব তৈরি, সংগীত চর্চার জন্য প্রশিক্ষণ, হোমস্টের জন্য ২ লাখ পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়। অভিষেক বলেন, ‘এই প্রতিজ্ঞাগুলি আপনাদের জন্য উপহার নয়, এগুলো মেঘালয়বাসীর অধিকার। আমরা মেঘালয়ের নাগরিকদের অধিকারের জন্য লড়ব।’ ইস্তেহার প্রকাশ অনুষ্ঠানে অভিষেক আরও বলেন, ‘তৃণমূল যখন প্রথম মেঘালয়ে পা রাখে, আমাদের বহিরাগতের তকমা দেওয়া হয়েছিল। আমি গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, নির্বাচণ ঘোষণার পর আমরাই প্রথম রাজনৈতিক দল হিসেবে ইস্তেহার প্রকাশ করছি। আর যারা আমাদের বহিরাগত তকম দিয়েছিলেন, তারা এখনও পর্যন্ত কিছু করতে পারেনি।’ এখানেই শেষ নয়। সরকার গঠনের ১০০ দিনের মধ্যে সমস্ত প্রতিশ্রুতি পূরণ করা হবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন অভিষেক।