গ্রাম থেকে শহর, সর্বত্রই লিজ হোল্ডারদের পূর্ণ মালিকানা দিতে চায় রাজ্য। আর তাই আগেই
লিজে দেওয়া সরকারি জমি পূর্ণ মালিকানা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা। এরই মধ্যে এবার শহরাঞ্চলের লিজ জমির বিষয়ে পদক্ষেপ করেছে রাজ্যের নগরোন্নয়ন দফতর।
দিন তিনেক আগেই নগরোন্নয়ন দফতরের সচিব খলিল আহমেদ একটি বিস্তারিত নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছেন, কীভাবে শহরাঞ্চলে লিজে দেওয়া সরকারি জমির পূর্ণ মালিকানা পেতে পারেন লিজ হোল্ডাররা। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, লিজ হোল্ডারদের পূর্ণ মালিকানা পাওয়ার জন্য দু’টি খাতে টাকা দিতে হবে। এক, লিজ থেকে পূর্ণ মালিকানায় রূপান্তরের জন্য কনভার্সন চার্জ এবং দুই, বাজার দরে জমির দাম। দুই খাতেই অর্থ মেটাতে হবে এককালীন। প্রশাসনিক আধিকারিকরা মনে করছেন, এর ফলে রাজ্য কোষাগারে একলপ্তে বিপুল টাকা আসবে।
প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকার বেশ কিছু পরিকাঠামো উন্নয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার মধ্যে যেমন কিছু এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করার কথা আছে, রয়েছে কয়েকটি শিল্পতালুক তৈরির বিষয়। এছাড়া বর্তমান পরিকাঠামো সংস্কার ও সক্ষমতা বৃদ্ধির মতো বিষয়গুলি সরকারের ভাবনায় রয়েছে। এর জন্যে যে বিপুল পরিমাণ অর্থের সংস্থান করা দরকার, তা এইমুহূর্তে অন্য কোনও উপায়ে সরকারের হাতে আসার সুযোগ নেই। এই পরিস্থিতিতে লিজে দেওয়া জমি যদি পূর্ণ মালিকানা দেওয়া যায়, তাহলে এই খাতে এককালীন বিপুল টাকা আসতে পারে। কারণ, শহরাঞ্চল থেকে এই পথেই সরকারের আয়ের রাস্তা সহজ হবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
নগরোন্নয়ন দফতরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পূর্ণ মালিকানা পেতে হলে জমি সরকারের কাছ থেকে নগদ টাকায় কিনতে হবে। এই কেনার জন্য সংশ্লিষ্ট লিজ হোল্ডারকে সরকারকে এককালীন বাজারদরে টাকা মেটাতে হবে। অর্থাৎ, যেই জমি তাঁর কাছে লিজে আছে, সেটির বর্তমান বাজার মূল্যে মেটাতে হবে। গত ১৭ জানুয়ারি নগরোন্নয়ন দফতরের সচিব খলিল আহমেদ যে নির্দেশিকা জারি করেছেন তাতে বলে দেওয়া আছে, যে কোন পরিমাণ জমির জন্য কীভাবে অর্থ আদায় করা হবে এবং লিজ থেকে পূর্ণ মালিকানার জন্য কোন নিয়মে টাকা মেটাতে হবে। এই বিস্তারিত তথ্য জানিয়েই তিনি নির্দেশিকা জারি করেছেন। তাতে রাজ্য সরকার কতগুলি শর্ত আরোপ করেছেন।
এই শর্তগুলি হল যে, সংশ্লিষ্ট জমি যদি লিজ হোল্ডার অন্য কাউকে সাব লিজ দিয়ে থাকেন তাহলে ওই সাব লিজ বাতিল হলে তবেই সরকার মালিকানা দেবে। এছাড়া তাতে বলা আছে যে, লিজ নেওয়া জমিতে যদি কিছু নির্মাণ করা হয়ে থাকে, তাহলে সেগুলি বৈধ উপায়ে নির্মিত হয়েছে কিনা, সেটাও সরকার বিবেচনা করে দেখবে। যদি কোনও নির্মাণ বেআইনি হয়, তাহলে সেটিকে আগে বৈধ করতে হবে। তারপর সেই জমির পূর্ণ মালিকানা সরকার দেবে। নগরোন্নয়ন দফতরের সচিবের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, আগে লিজ বাবদ সরকারের পাওনা সেই বকেয়া টাকা মেটাতে হবে হোল্ডারদের। তারপরেই সেই জমির পূর্ণ মালিকানা প্রদান করা হবে।