ক্রমশ ঊর্ধ্বগামী রাজনীতির পারদ। সামনেই বিধানসভা নির্বাচন মেঘালয়ে। ইতিমধ্যেই সে রাজ্যে ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। শাসকদল বিজেপিকে কড়া চ্যালেঞ্জ জানাতে তৈরি ঘাসফুল শিবির। বুধবার মেঘালয়ের উত্তর গারের এক জনসভায় কেন্দ্রের বিজেপি ও এনডিপির বিরুদ্ধে স্বর তুললেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, “মেঘালয়েও সম্ভব। বাংলায় অনেক লড়াই করে ক্ষমতায় এসেছি। কেউ ভোট এলেই সব ফ্রি দেওয়ার কথা বলবে, আর ভোট শেষ হলেই উধাও হয়ে যাবে, এরকম বেশিদিন চলবে না।” পাশাপাশি নাম না করে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাকেও একহাত নিলেন তিনি। তৃণমূল সুপ্রিমোর স্পষ্ট ঘোষণা, মেঘালয়ে সাধারণ মানুষের জন্য একটা ভালো সরকার দিতে পারে একমাত্র তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের ৬০ আসনের মধ্যে ৫২ আসনে প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে তৃণমূল। মমতা বলেন, “আপনারা জানলে অবাক হবেন কীভাবে আমার উপরে অত্যাচার করা হয়েছে। আমার মাথায় অপারেশন হয়েছে, দুটো চোখে, হাতে, শিরদাঁড়ায় অপারেশন হয়েছে। কিন্তু কখনও মাথা নোয়াইনি। কারণ রাজনীতি আমার পেশা নয়, আমার প্যাশন। আমি মনে করি রাজনীতির মাধ্যমে মানুষের উপকার করা সম্ভব হবে। এখন আমাদের ওখানে যদি কোনও আগুন লাগে, আমরা সরকার থেকে সাহায্য করি, কোনও দুর্ঘটনা হলে সাহায্য করি, কেউ মারা গেলে সাহায্য করি। কৃষকদের, যুবকদের, ছাত্রদের সাহায্য করি। রাজ্যের ১০ কোটি মানুষের মধ্যে ৯.৫ কোটি মানুষকে বিনা পয়সায় রেশন দেওয়া হয়। এমনকি তাদের ঘরে পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া হয়। আমরা ফ্রিতে চিকিত্সা দিই। আপনারা কলকাতায় গিয়ে দেখুন, ফ্রিতে ট্রিটমেন্ট হয়। আমরা ৬০ হাজার শিশুকে বিনা পয়সায় হার্ট অপারেশন করিয়েছি।”
পাশাপাশি, বাংলায় ছাত্রদের কথা বলতে গিয়ে মমতা বলেন, “স্মার্ট ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে আমরা পড়ুয়াদের ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের ব্যবস্থা করেছি। পরিবারকে তাদের জন্য ভাবতে হয় না। তারা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হতে পারে। কিন্তু কী করেছে এই সরকার? রিপোর্ট কার্ড কোথায়? আমি চ্যালেঞ্জ করছি, আপনারা প্রথমে আপনাদের রিপোর্ট কার্ড দেখান। তার পর অন্য কথা বলবেন। ভোটের সময়ে পেট্রোল ফ্রি, আরও কত কী ফ্রি। ভোটের সময়ে তারা হিরো। টেলি প্রম্পটান এনে বক্তৃতা করে। আগে থেকেই বক্তব্য তৈরি করা থাকে।” মেঘালয়ে দলকে আনা প্রসঙ্গে মমতা বলেন, :মুকুল সাংমা-সহ অন্যান্য বিধায়করা যখন আমার বাড়ি গিয়েছিল তখন খুব খুশি হয়েছিলাম। উত্তরপূর্ব ভারতের রাজ্যগুলি সম্পর্কে আমি কিছু খবর রাখি। কিন্তু আমাকে বলুন গুয়াহাটি থেকে কেন একজন ডি ফ্যাক্টো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ করবেন? তিনি গোটা উত্তরপূর্ব ভারতকে চালনা করবেন? সীমানা বিবাদ মেটানো হবে না কেন? এখানে বহু জায়গায় বিদ্যুৎ পর্যন্ত নেই। আমি বলতে চাই, তৃণমূল কংগ্রেস একমাত্র দল যারা এখানে একটা ভালো সরকার দিতে পারে। আমরা মহিলাদের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দিয়েছি, ছাত্রদের স্মার্ট ফোন, স্কুল ড্রেস ফ্রিতে দিয়েছি।” এছাড়া, মোদী সরকারের বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন মমতা। “বিজেপির একটা দুমুখো নীতি রয়েছে। ভোটের সময়ে এক জিনিস। ভোট ফুরোলে অন্য রূপ। এখান যা হবে মেঘালয়ের জন্যই হবে। গোটা দেশে যেখানে বেকারি বেড়েছে সেখানে বাংলায় ৪০ শতাংশ কর্মসংস্থান বেড়েছে। এটা একমাত্র আমরাই পারি। তাই মেঘালয়ে তৃণমূলকে ক্ষমতায় আনুন”, বার্তা তৃণমূল সুপ্রিমোর।
