যতই দিন যাচ্ছে, ততই দুশ্চিন্তা ও আশঙ্কা মাথাচাড়া দিচ্ছে যোশীমঠ এলাকার বাসিন্দাদের মনে। ক্রমশ ফাঁকা করা হচ্ছে বসতি। এদিকে চওড়া হচ্ছে যোশীমঠের বাড়ি ও রাস্তাঘাটের ফাটল। জানা গিয়েছে, বিগত কয়েকদিনে ফাটলগুলি এতটাই চওড়া হয়েছে যে আস্ত একটা মানুষ সেই গর্তে ঢুকে যেতে পারে! বিশেষজ্ঞরাও জানিয়েছেন যে, ক্রমাগত ধসে যাচ্ছে যোশীমঠ ও আশেপাশের এলাকার মাটি। বিগত কয়েকদিনে মাটি কমপক্ষে ২.২ ফুট বসে গিয়েছে। জানুয়ারির শুরু থেকে এই ভূমিধসের গতি বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, গত ২রা জানুয়ারি যোশীমঠে কোনও ছোটখাটো বিস্ফোরণ হয়। এরপর থেকেই দ্রুতগতিতে নামছে ধস। ফাটল ধরছে বাড়িঘরগুলিতে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন বা ইসরোর তরফে উপগ্রহ চিত্র প্রকাশ করা হয়েছিল। তাতে দেখা গিয়েছিল, গত ২৭শে ডিসেম্বর থেকে গত ৮ই জানুয়ারির মধ্যে, মাত্র ১২ দিনে যোশীমঠের মাটি ৫.৪ সেন্টিমিটার বসে গিয়েছে। এই ছবি ঘিরে আতঙ্ক যেমন তৈরি হয়। এদিকে, যোশীমঠের এলাকা পরিদর্শনের পরই বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, “এলাকা পরিদর্শনের পর স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে যোশীমঠের জেপি কলোনির ব্যাডমিন্টন কোর্টের ভিতরে ও আশেপাশে কমপক্ষে ৭০ সেন্টিমিটার মাটি ধসে গিয়েছে। ২রা জানুয়ারির বিস্ফোরণের জেরে এই ফাটল ধরেছে।” মনোহর বাগে ৭ থেকে ১০ সেন্টিমিটার মাটি ধসে গিয়েছে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সেক্রেটারি রঞ্জিৎ সিনহার নেতৃত্বে আটজন আধিকারিক ও বিশেষজ্ঞরা মিলে গত ৫ থেকে ৬ই জানুয়ারি এলাকা পরিদর্শন করেন। তারা জানিয়েছেন, ইসরোর রিমোট সেন্সিং টেকনোলজির মাধ্যমে এই ধস সম্পর্কে আরও বিস্তারিতভাবে দেখা যাবে। রিমোট সেন্সিংয়ের মাধ্যমে মাটির উপরে ফাটল ও ধস দেখা গেলেও, মাটির নীচে কী হচ্ছে, তার জন্য গভীরে গিয়ে তদন্ত করতে হবে। জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত যোশীমঠের ৮২৬ টি বাড়িতে চিড় পাওয়া গেছে। আরও ১৬৫ টি বাড়ি রয়েছে আন-সেফ জোনে। অর্থাৎ, আরও বেশ কিছু বাড়িতে ফাটল দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।