ফের নেমে এল দুর্যোগের কোপ। কদিন আগেই উত্তরাখণ্ডের যোশীমঠে ধরা পড়েছে একাধিক ফাটল। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সে অঞ্চলের বাসিন্দাদের মধ্যে। এমন আবহের মধ্যেই এবার ভূমিকম্প হল উত্তরকাশীতে। শুক্রবার রাত ২টো ১২ মিনিটে কেঁপে ওঠে দেবভূমির ওই এলাকা। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ২.৯। ভূমিকম্পের প্রভাব পড়েছিল যোশীমঠেও। ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজির তরফে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল যোশীমঠ থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরে। তবে কম্পনের মাত্রা কম থাকায় যোশীমঠের উপর এই ভূমিকম্পের খুব বেশি প্রভাব পড়েনি। যদিও বিশেষজ্ঞদের দাবি, ভূমিকম্পের তীব্রতা বাড়লে বড়সড় বিপর্যয় ঘটবে উত্তরাখণ্ডের এই এলাকায়। ইতিমধ্যে যোশীমঠের ৭০০-র বেশি বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। একদিকের রাস্তা ধসে যাওয়ায় খাদের ধারে ঝুলছে ‘মালারি ইন’ ও ‘মাউন্ট ভিউ’-র মতো হোটেল। এই অবস্থায় ভূমিকম্প হলে সে এলাকার অধিকাংশ বাড়িঘর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের দাবি, প্রাচীনকালে ভেঙে পড়া পাহাড়ের ধ্বংসাবশেষের উপর গড়ে উঠেছে যোশীমঠ শহর। সেখানে অপরিকল্পিতভাবে ধারাবাহিক উন্নয়নের কাজ চালানোয় নীচের পাথর আলগা হয়ে গিয়েছে বলে অনুমান। এই অবস্থায় পুরো যোশীমঠই পুরোপুরি অবলুপ্ত হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তাঁরা। যোশীমঠের সেনা ছাউনিতেও দেখা গিয়েছে ফাটল। সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে সেনা জওয়ানদের। যোশীমঠের এই এলাকা থেকে চিন সীমান্তের দূরত্ব মাত্র ১০০ কিলোমিটার। ওই ছাউনি থেকে জওয়ানদের সরালেও সীমান্ত রক্ষার কাজে কোনও ঘাটতি থাকবে না বলে জানিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ পাণ্ডে। অন্যদিকে যোশীমঠে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে উত্তরাখণ্ড সরকার। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে দেড় লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। তবে হোটেল মালিকদের ক্ষতিপূরণের ব্যাপারে কিছু ঘোষণা করা হয়নি। যদিও উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকারের এহেন সিদ্ধান্তে প্রবল অসন্তোষ জমেছে স্থানীয় বাসিন্দা ও হোটেল মালিকদের মনে।
