কড়া পদক্ষেপের পথে তৃণমূল নেতৃত্ব। আর কিছুদিন পরেই পঞ্চায়েত নির্বাচন বাংলায়। তার প্রাক-লগ্নে রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠনকে ঢেলে সাজাতে চলেছে তৃণমূল। এবার থেকে চাইলেই আর রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের সদস্যপদ পাওয়া যাবে না। পূরণ করতে হবে আবেদন পত্র। সেখানে ব্যক্তিগত বিবরণীর পাশাপাশি লিখতে হবে, “কেন আমি শাসকদলের সরকারি কর্মচারী সংগঠনে যোগ দিতে চাই।” সে আবেদনপত্র খতিয়ে দেখবে রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশন বা পিআরএসকেএফ। বুধবার রাজ্য খাদ্য দপ্তরের অডিটোরিয়ামে নতুন ফর্মের উদ্বোধন করলেন সংগঠনের চেয়ারম্যান রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। হাজির ছিলেন সংগঠনের আহ্বায়ক প্রতাপ নায়েক, নেতা শ্যামল পট্টনায়ক। নতুন ফর্ম পাবেন পুরসভা এবং পঞ্চায়েতের স্থায়ী কর্মীরাও। শুধুমাত্র সদস্যসংখ্যা বাড়ানো উদ্দেশ্য নয়। মানস ভুঁইয়ার কথায়, ‘‘কার্বাইড দিয়ে পাকানো সদস্য চাই না। দেখতে হবে কোন রাজ্য সরকারি কর্মচারী মন থেকে সদস্য হতে চাইছেন। কারও সামনে হাত কচলাবেন না। অন্তর থেকে যিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে চলতে চান তাঁকেই ডেকে নিন।’’
অনেকেই পাড়ায়, অফিসে তৃণমূলের নিন্দায় মুখর হন। এমন সিপিএম নেতাদের সঙ্গে অতিরিক্ত মাখামাখি করতে বারণ করেছেন মন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে এদিন নিজের জেলা সবংয়ের এক ব্যক্তিকে চিহ্নিত করেছেন তিনি। কমল কর্মকার নামে জেলার পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়ন বিভাগের এক কর্মী তথা সিপিএম নেতার সঙ্গে গলাগলি করে ছবি তুলেছেন এক তৃণমূল কর্মী। তাঁকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মানস জানান, ‘‘ওখান থেকে সরে এসো। নয়তো তোমায় সড়িয়ে দেবো।’’ পাশাপাশি তিনিবলেন, ‘‘এখন বিডিও অফিস, পঞ্চায়েত অফিসগুলো থিকথিক করছে সিপিএম সমর্থিত কোঅর্ডিনেশন কমিটির কর্মীতে। তাঁরা রাজ্য সরকারকে বিপদে ফেলতে সদা ব্যস্ত। তাদের সঙ্গে মধু মাখিয়ে সম্পর্ক করা যাবে না।’’ তবে বিরোধীদের প্রতি উষ্মা ও ক্ষোভ রাখতে বারণ করেছেন মন্ত্রী। বরং তাঁর কথায়, সিপিএম, বিজেপি করলে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু আমার দলের কর্মচারী সংগঠন করবেন, আর দলের নিন্দে করবেন, তা হবে না একেবারেই। নতুন নিয়ম অনুযায়ী কোনওরকম ব্যক্তিগত ক্ষোভ থাকলে সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করা যাবে না। তা জানাতে হবে দলের মধ্যেই। সদস্যপদ দেওয়ার সময় কোনও টাকা নেওয়া যাবে না। যদি কোনও জায়গা থেকে টাকা নেওয়ার খবর আসে, তাহলে অভিযুক্ত চাকরি হারাবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মন্ত্রী।