তৎপর রাজ্য স্বাস্থ্যদফতর। এবার হাম ও রুবেলার টিকাকরণে জোর দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম। সম্প্রতি হাম প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে মুম্বইয়ে। প্রতি বছর এ সময়ে সংক্রমণ বাড়ে। তার ওপর করোনার প্রকোপও রয়েছে। তাই আর দেরি করতে চায় না স্বাস্থ্যভবন। মেয়র জানালেন, আজ থেকে শহরের স্কুলগুলিতে হাম ও রুবেলার টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। আজ চেতলা গার্লস হাইস্কুলে টিকা দেওয়া হচ্ছে। সদ্যোজাত থেকে ১৫ বছর বয়স অবধি টিকা দেওয়া হবে। আজ, ৯ই জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে টিকাকরণ। চলবে ১১ই ফেব্রুয়ারি অবধি। সদ্যোজাত থেকে ১৫ বছর বয়সীদের কেউ যাতে টিকাকরণ থেকে বাদ না যায় সে জন্য নির্দেশিকা দিয়েছে স্বাস্থ্য়ভবন। পাশাপাশি, হাম ও রুবেলা নিয়ে প্রচার চালাতে হবে স্কুলগুলিতে। কেন হাম ও রুবেলার টিকাকরণ জরুরি, তা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বোঝাবেন স্বাস্থ্যকর্মী, আশাকর্মীরা।
প্রসঙ্গত, বাচ্চাদের ক্ষেত্রে জ্বরের সঙ্গে গায়ে র্যাশ বেরিয়ে যে সব রোগ হয়, তার অন্যতম হল মিজলস বা হাম এবং রুবেলা। এইসব অসুখ প্রাণঘাতীও বটে। প্রাথমিক ভাবে জ্বর, সর্দি, হাঁচি, সারা শরীরে ব্যথা হয়। তারপরে লালচে র্যাশ বের হতে শুরু করে। সারা গায়ে জলভর্তি ফোস্কার মতো বড় বড় র্যাশ দেখা যায়। চোখ লাল হতে শুরু করে, অনবরত চোখ দিয়ে জল পড়ে, চোখের পাতা ফুলে যায়। বাচ্চাদের এই সময় কাশি হয়, গলা বসে যায়। এই উপসর্গগুলি দু-তিন দিন থাকে। মুখের ভিতরে দানা দানা ভাব দেখা দেয় এবং আস্তে আস্তে তা সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। হাম ও রুবেলার টিকা বাচ্চাদের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ বলেও জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
উল্লেখ্য, ভারতে ক্রমশ বাড়ছে হাম রোগীর সংখ্যা। বিহার, গুজরাত, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ড, কেরল এবং মহারাষ্ট্রে হামের ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। এই অবস্থায় সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক শিশুদের হাম ও রুবেলা প্রতিষেধকের একটি বাড়তি ডোজ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। শিশুরা হাম ও রুবেলার টিকার প্রথম ডোজটি নয় থেকে বারো মাসের মধ্যে এবং দ্বিতীয় ডোজটি ষোলো থেকে চব্বিশ মাসের মধ্যে পায়। এর অতিরিক্ত আরও একটি ডোজকে এই প্রক্রিয়ার অন্তর্ভুক্ত করার কথা বিবেচনা করতে রাজ্যগুলিকে বলেছে কেন্দ্র। বাংলার স্কুলগুলিতে পনেরো বছর বয়স পর্যন্ত পড়ুয়াদের এই দুই রোগের প্রতিষেধক দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে রাজ্য সরকার।