মুখ ফসকে শেষমেশ বহুচর্চিত জল্পনাকেই মান্যতা দিয়ে ফেললেন তিনি? বাংলার রাজ্য-রাজনীতির আঙিনায় বারবার শোনা গিয়েছে ‘রাম-বাম’ জোট অর্থাৎ বিজেপি-সিপিএমের গোপন আঁতাত সম্পর্কিত নানাবিধ গুঞ্জন। এবার বামেদের গুণগান গাইতে গিয়ে সেই আঁতাতের কথাই কার্যত স্বীকার করে নিলেন বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। মেনে নিলেন, বামপন্থীরা ভোট না দিলে নন্দীগ্রামে তিনি জিততে পারতেন না। বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী, নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে সামান্য কিছু ভোটে পরাজিত হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও সেই ফলাফল নিয়ে তুমুল বিতর্ক রয়েছে। শুভেন্দুর বিরুদ্ধে গণনায় বেনিয়মের অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই মামলা এখনও বিচারাধীন। এর মধ্যেই বাম-রামের এই অশুভ আঁতাত নিয়ে বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি করে বসলেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর মুখে বামেদের ভূয়সী প্রশংসাও শোনা গেল। স্বাভাবিকভাবেই এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে প্রবল শোরগোল।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, যে নন্দীগ্রামকে বাম-বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম শিকড় হিসাবে ধরা হয়, শনিবার শহিদ দিবসে সেই নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “তৃণমূলের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী ছিল বামফ্রন্ট। এদের থেকে অনেক বড় সংগঠন ছিল সিপিএমের। ৩৪ বছর ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু সব বামপন্থী খারাপ নন।” পাশাপাশি শুভেন্দুর স্বীকারোক্তি, “অনেক বামপন্থীই আমাদের সঙ্গে এসেছেন। নন্দীগ্রামে একটা বড় অংশ যাঁরা হিন্দু, তাঁরা ভোট দিয়েছেন বলে আমি জিতেছি। আমি তা অকপটে স্বীকার করি।” অর্থাৎ রাম-বাম জোটের কথা সেই ২০১৯ লোকসভা ভোটের আগে থেকে তৃণমূল বলে আসছিল, এদিন সেটাই মেনে নিলেন বিরোধী দলনেতা। বামেরাও তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে শুভেন্দুর মন্তব্যে। বাম নেতাদের বক্তব্য, “বামেদের ভোট ভুল বুঝিয়ে ওরা কাছে টানতে চাইছে। এখন বিজেপির হাওয়া খুব খারাপ, তাই চেষ্টা করছে, যাতে আরও ভোট বাড়ানো যায়।” উল্লেখ্য, বিজেপির অন্দরেও শুভেন্দুর কথার বিপরীত সুর শোনা গিয়েছে। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, “বিজেপির কারও সাহায্যের প্রয়োজন হয় না। বিজেপি একাই নির্বাচন জিততে পারে।” অর্থাৎ, ঘুরিয়ে বিরোধী দলনেতাকেই কটাক্ষ করেছেন দিলীপ, এমনই মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা।