আবাস যোজনায় নিয়ে বাংলার পিছনে হাত ধুয়ে পড়ে গেছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। এ রাজ্যে বাড়ির জন্য মোট আবেদন জমা পড়েছে ৩৯,৮৪,৭০২। এর মধ্যে এবার বাড়ির জন্য টাকা পাবেন ১১ লক্ষ ৩৬ হাজারটি পরিবার। এ জন্য কেন্দ্র টাকা দিয়েছে ৮২০০ কোটি টাকা। রাজ্য খরচ করছে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, এর পরেও প্রায় ২৮ লক্ষ ৪৮ হাজার পরিবারের কাছে পাকা বাড়ি থাকবে না। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় এর দায় শুধু রাজ্যের নয়। বাংলা তো নয়ই, কোনও রাজ্যের একার দায় নয়।
পূর্বতন যোজনা কমিশন তথা বর্তমান নীতি আয়োগের মতে এর যৌথ দায় রয়েছে। কেন্দ্র-রাজ্য দু’জনকেই দায় নিতে হবে। তাই গ্রাম ও প্রান্তিক এলাকার মানুষদের বাড়ি বানাতে কেন্দ্র অনেক দিন ধরেই রাজ্যগুলোকে ধাপে ধাপে টাকা দিচ্ছে। আগে সেই প্রকল্পের নাম ছিল ইন্দিরা আবাস যোজনা। মোদী সরকারের সেই নাম পছন্দ হয়নি। তাই বদলে করেছে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা। অর্থাৎ ভিতরের বস্তুটা এক। জামাটা নতুন।
সেই নতুন জামা পরিয়ে প্রধানমন্ত্রী ২০১৮ সালের ৫ জুন ঘোষণা করেছিলেন ২০২২ সালের মধ্যে দেশের সবার পাকা বাড়ি থাকবে। সেই সময়ে ১ কোটি ২২ লক্ষ পরিবারকে টাকা দেওয়ার জন্য লিস্ট তৈরি হয়েছিল। তার অর্ধেক পথ মাত্র পৌঁছতে পেরেছে মোদী সরকার। অর্থাৎ সেই তালিকা থেকে মাত্র ৬১ লক্ষ পরিবারকে টাকা দেওয়া গেছে। এমনকি যে রাজ্যগুলিতে ‘ডবল ইঞ্জিন সরকার’ চলছে, সেখানে গৃহহীনের সংখ্যা বহু লক্ষ। গত চার বছরে সেই ৬১ লক্ষ বেড়ে এতদিনে প্রায় ১ কোটি ছুঁয়েছে।
অর্থাৎ মোদী সরকার আশাহত করেছে বাংলার অন্তত ২৮ লক্ষ ৪৮ হাজার পরিবারকে। তাদের ২০২২ সালের মধ্যে বাড়ি বানানোর জন্য টাকা দেবেন বলেও দিতে পারেননি। তর্কের খাতিরে ধরা যাক এই ২৮ লক্ষ ৪৮ হাজারের মধ্যে সাড়ে ৩ লক্ষ পরিবারের টাকা পাওয়ার যোগ্যতা নেই। স্ক্রুটিনিতে তাদের নাম বাদ যাবে। তা হলেও সংখ্যাটা দাঁড়ায় ২৫ লক্ষ। এই ২৫ লক্ষ পরিবারকে বাড়ি বানানোর জন্য কেন্দ্রের ২০ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার কথা। রাজ্যের দেওয়ার কথা ১০ হাজার কোটি টাকা। ভুলে গেলে চলবে না, যেহেতু প্রকল্পটির নাম প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, তাই কিস্তির টাকা প্রথমে কেন্দ্রেরই দেওয়ার কথা। রাজ্য দেবে ম্যাচিং গ্রান্ট। অর্থাৎ সাদাকালোয় পরিষ্কার যে মোদী সরকার ডেডলাইন ফেল করেছে।