সূচনালগ্নেই প্রবল বিতর্কের সম্মুখীন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। চালু হওয়ার তিন দিনের মধ্যেই বাংলায় দু’বার হামলার ঘটনা ঘটেছে এই এক্সপ্রেসে। যা নিয়ে তুঙ্গে তোলপাড়। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। এই ঘটনার তদন্তভার কাকে দেওয়া উচিত, তা নিয়ে এবার বিজেপির অন্দরেই দেখা দিল মতান্তর। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী যেখানে বন্দে ভারতে পাথরবৃষ্টির ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবি করেছিলেন, সেখানে রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থা সিআইডির উপর ভরসা রাখছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার। প্রসঙ্গত, হাওড়া-এনজেপি বন্দে ভারত যাত্রা শুরুর পরের দিনই মালদহে হোঁচট খায়। ট্রেন লক্ষ্য করে পাথর ছোঁয়া হয়। ভাঙে কাচ। মঙ্গলবারও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে নিউ জলপাইগুড়িতে। অভিযোগ, এনজেপি স্টেশনে ঢোকার আগে বন্দে ভারতের দিকে পাথরবৃষ্টি হয়। সেমি হাই স্পিড ট্রেনটির সি৩ এবং সি৬ কামরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
উল্লেখ্য, প্রথমবার হামলার পর বিজেপির রাজ্য সভাপতি দাবি করেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানের ‘বদলা’ নিতেই এহেন ঘটনা ঘটানো হয়েছে। অর্থাৎ ঘুরিয়ে শাসক দলের দিকেই আঙুল তুলেছিলেন তিনি। পাথরবৃষ্টির ঘটনায় ইতিমধ্যেই তদন্তে নেমেছে রেল পুলিশ। শুভেন্দু অধিকারী ইতিমধ্যেই বন্দে ভারত ইস্যুতে এনআইএ তদন্ত দাবি করেছেন। বিজেপির একাংশের মতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাই এই ঘটনা নিরপেক্ষ ভাবে খতিয়ে দেখতে পারবে। কিন্তু এ নিয়ে একেবারে বিপরীত সুর কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারের গলায়। তিনি এই ঘটনায় সিআইডি তদন্তের দাবি করেছেন। তিনি জানান, রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থার উপর ভরসা রয়েছে। এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আশাও রাখছেন তিনি। ফলত বিজেপির অন্দরমহলই এ নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত। এ নিয়ে তৃণমূল বিধায়ক বাবুল সুপ্রিয়র খোঁচা, “বিজেপিতে দু-একজন শিক্ষিত মানুষ রয়েছেন। সেই কারণেই উনি ঠিকঠাক কথা বলেছেন। তবে অশিক্ষিতদের ভিড়ে শিক্ষিতরা হারিয়ে যাচ্ছে।” বিগত দিনেও একাধিক ইস্যুতে প্রকাশ্যে এসেছে বঙ্গ বিজেপির আভ্যন্তরীণ কোন্দল। এবার বন্দে ভারত প্রসঙ্গেও দ্বিধাবিভক্ত বঙ্গ পদ্মশিবির। স্বাভাবিকভাবেই চাপে পড়েছে দলীয় নেতৃত্ব। এখন পরিস্থিতি কোন অভিমুখে এগোয়, সে দিকেই তাকিয়ে রাজনীতির কারবারিরা।
