যেখানে দেশের বড় বড় শহরগুলিতে অপরাধের সংখ্যা অনেক বেশি, সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে ক্রমশই কলকাতায় কমছে অপরাধ। গত কয়েক বছরে শুধু দেশের অন্য শহরের তুলনায় কলকাতায় অপরাধের হার যে কম তাই নয়, বছরে বছরে কলকাতায় অপরাধের হারের গ্রাফও নিম্নমুখী। ফলে দেশের মধ্যে কলকাতা যে নিরাপদতম শহর, সেই তথ্য উঠে এল লালবাজারের সমীক্ষাতেও।
সোমবার লালবাজারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০২১ সালে দিল্লীতে ২৩৪০টি, মুম্বইয়ে ৮৭৭, চেন্নাইয়ে ৬২৯, বেঙ্গালুরুতে ৫৪১টি ডাকাতি হয়। সেখানে কলকাতায় ডাকাতির সংখ্যা ছিল ২৩টি। গত বছর ডাকাতির সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ২১টি। ধর্ষণ, পণের জন্য বধূহত্যা, আত্মহত্যায় প্ররোচনার মতো মহিলাদের প্রতি বড় ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে ২০২১ সালে দিল্লীতে হয়েছিল ১৪৪৬, মুম্বইয়ে ৪৩৩, চেন্নাইয়ে ৭৪, বেঙ্গলুরুতে ২৪৬টি মামলা। সেখানে ওই বছর কলকাতায় হয়েছিল ৩৪টি অপরাধ। গত বছর কলকাতায় হয়েছিল ৩৩টি মহিলাদের প্রতি অপরাধ।
অন্যদিকে, ২০২১ সালে দিল্লীতে ৪৫৪, মুম্বইয়ে ১৬২, চেন্নাইয়ে ১৬১, বেঙ্গালুরুতে ১৫৫টি খুনের ঘটনা ঘটেছিল। সেখানে ২০২১ সালে কলকাতায় খুন হয় ৪৫টি। গত বছর কলকাতায় খুনের সংখ্যা নেমে দাঁড়ায় ৩৪টি। কলকাতায় অপরাধের হার যে ক্রমে কমছে, সেই প্রমাণও মিলেছে। ২০১৮ সালে ১৫২.২, ২০১৯-এ ১৪১.৬, ২০২০ সালে ১২৯.৫ ছিল অপরাধের হার। ২০২১ সালে সেই হার কমে দাঁড়ায় ১০৩.৪। ওই সালে অপরাধের হার ছিল দিল্লীতে ১৮৫৯, চেন্নাইয়ে ১৩২৫.৩, মুম্বইয়ে ৪২৮.৪, বেঙ্গালুরুতে ৪২৭.২।
এখনও পর্যন্ত শহরজুড়ে রয়েছে পুলিশের আড়াই হাজার সিসিটিভি ক্যামেরা। অপরাধ আরও কমাতে ও ট্রাফিকের নজরদারির জন্য নির্ভয়া ফান্ডে আরও ৩৫০০ সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর কাজ চলছে। জানা গিয়েছে, প্রত্যেক ১০০ বর্গমিটারে একেকটি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে লালবাজার। সব মিলিয়ে কয়েক বছরের মধ্যে শহরে সাড়ে ৩৫০০ নতুন সিসিটিভি ক্যামেরা ও ১৫০ আধুনিক এএনপিআর সিসিটিভি ক্যামেরা বসাবে কলকাতা পুলিশ। মূলত নারী নিরাপত্তায় স্কুল, কলেজ, বাসস্ট্যান্ড, কাফে বা রেস্তরাঁর মতো জায়গাগুলিতে পরিকল্পিতভাবে বসানো হবে নতুন সিসিটিভি ক্যামেরা।