দুর্নীতিরোধ নিয়ে সরাসরি বার্তা দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালেন, পার্টির উপর নজরদারি দরকার। তাঁর তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, ‘ধানে একটি পোকা থেকে অনেক পোকা জন্মায়, তাই সেই পোকাকে আগেই নির্মূল করতে হবে। মনে রাখবেন, আমি নিজেও দলের ঊর্ধ্বে নই, মানুষের ঊর্ধ্বে নই।’
সরকারি সুযোগ-সুবিধা সাধারণ মানুষের হাতে পৌঁছচ্ছে কি না, এ বার দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে সেই খবরই নিতে চাইছে তৃণমূল। এ জন্য বছরের দ্বিতীয় দিনেই ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ নামে একটি কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই কর্মসূচিতে রাজ্যের প্রতিটি মানুষের বাড়িতে গিয়ে তাঁরা সরকারি প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা নিতে পারছেন কি না, জানবেন ‘দিদির দূত’রা। এই আদলেই চলবে তৃণমূলের জনসংযোগ।
এই প্রেক্ষিতে মমতার কাছে প্রশ্ন ছিল, এই কর্মসূচির মধ্যে কি দুর্নীতিগ্রস্ত নেতা, জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার সংস্থানও থাকছে? প্রসঙ্গত, ইদানীং একাধিক পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধির পদ কেড়ে নেওয়া হয়েছে দুর্নীতি, স্বজনপোষণের অভিযোগে। জবাবে অভিষেককে পাশে বসিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ উত্তর দেন মমতা। তিনি বলেন, ‘নজরদারি তো রাখতেই হয়। গ্রাম পঞ্চায়েতের টাকা আগে রাজ্য সরকারের মাধ্যমে যেত। এখন সরাসরি চলে যায়। কাজেই আমরা যে মনিটরিং (নজরদারি) করব, তারও সুযোগ অনেক কম। আমাদের নজর রাখতেই হয়।’
তার পরেই মমতা বলেন, ‘কৈফিয়ত তো পঞ্চায়েতকে দিতে হবে না। মানুষের কাছে কৈফিয়ত দিতে হবে আমাকে। যাঁরা ভাল কাজ করবেন, তাঁরা প্রশংসিত হবেন। তাঁদের আরও অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করানো হবে। যদি একটা পোকা ধানে জন্মায়, তাকে সমূলে বিনাশ না করলে কিন্তু ওই পোকাটা থেকেই সারা ধানে পোকা লেগে যাবে। সুতরাং, আমাকে পোকাটা আগেই নির্মূল করতে হবে। দেখতে হবে যাতে পোকা না জন্মায়। আর যদি পোকা জন্মে থাকে, তা হলে প্রথমে তাকে সতর্ক করতে হবে। বলতে হবে, হয় নিজেকে সংশোধন করো, না হলে আমাদের অন্য কিছু ভাবতে হবে। মনে রাখবেন, আমিও দলের ঊর্ধ্বে নই, মানুষের ঊর্ধ্বে নই। আমার উপর মানুষের কী কী দায়বদ্ধতা আছে, তা আমি প্রতি দিন সকাল থেকে রাত মেনে চলি।’