বিজেপি সমর্থকদের ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি ঘিরে ফের তুঙ্গে পৌঁছল বিতর্ক। আজ কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মসূচী ছিল হাওড়া স্টেশনে। মাতৃবিয়োগের কারণে সশরীরে আসতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি আহমেদাবাদ থেকে যোগ দিয়েছিলেন ভার্চুয়াল মাধ্যমে। সেই কর্মসূচীতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে দর্শকদের একাংশ জয় শ্রীরাম স্লোগান দেন। এবার তা নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বক্তব্য রাখলেন বিজেপি সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া। স্পষ্ট করে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, সরকারি অনুষ্ঠানে তিনি এই ভাবে জয় শ্রীরাম স্লোগান দেওয়াকে কোনওভাবেই সমর্থন করেন না। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আলুওয়ালিয়া বলেছেন, “নানান রকমের মানুষ এ ধরনের অনুষ্ঠানে আসেন। তবে রাষ্ট্রীয় পর্বে (পড়ুন সরকারি অনুষ্ঠানে) ভারত মাতা কি জয় বলা উচিত।”
এদিন দেখা যায়, মমতা যখন জয় শ্রীরাম শুনে প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে মঞ্চে উঠতে চাইছেন না তখন তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণ। দেখা যায় মমতার সামনে গিয়ে হাতজোড় করে তাঁকে মঞ্চে ওঠার জন্য অনুরোধ করছেন রেলমন্ত্রী। আবার বাঁকুড়ার সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারকে দেখা যায়, যারা স্লোগান তুলছিল তাদের চুপ করানোর চেষ্টা করতে। কিন্তু তার পরেও মমতাকে মঞ্চে তোলা যায়নি। নীচে সিঁড়ির পাশে চেয়ার নিয়ে বসেছিলেন তিনি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, অশ্বিনী বৈষ্ণ এদিন যে সৌজন্য দেখিয়েছেন সেটা কার্যত শুভেন্দু তথা বাংলা বিজেপির অনেকের কথায় জলে গিয়েছে। বরং এটাই প্রকট ভাবে ধরা পড়েছে যে সরকারি অনুষ্ঠানে যে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে তা একপ্রকার সমর্থনই করেন শুভেন্দুরা।
উল্লেখ্য, আলুওয়ালিয়া বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা। অটলবিহারী বাজপেয়ীর আস্থাভাজন ছিলেন তিনি। বাজপেয়ী সরকারের সময় থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক বন্ধুত্ব। তবে তা ব্যতিরেকে রাজনৈতিক আচরণে বরাবরই সৌজন্য রেখে চলেছেন তিনি। রাজ্যসভায় তাঁর দীর্ঘ মেয়াদে কখনওই অশিষ্ঠ দেখা যায়নি তাঁকে। আলুওয়ালিয়া এখন বাংলার একজন বিজেপির নেতাও বটে। কারণ, তিনি বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি সাংসদ। সেদিক থেকে বাংলা বিজেপিতে তিনি এদিন ব্যতিক্রমী হয়েই থাকলেন। সম্প্রতি দেখা যাচ্ছিল, যে নরেন্দ্র মোদীর এই সরকারি কর্মসূচীকে বাংলা বিজেপি পুরোদস্তুর দলীয় কর্মসূচীর আঙ্গিক দিতে চাইছে। তা নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল রাজনৈতিক মহল।