দীর্ঘদিনের অপেক্ষায় পড়ল ইতি। খুশির হাওয়া ওপার বাংলার বাসিন্দাদের মধ্যে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে উদ্বোধন হল বহু প্রতীক্ষিত মেট্রোর। উত্তরায় অনুষ্ঠান শেষের পর বেলা ২ টো নাগাদ উত্তরা থেকে মেট্রোরেল যাত্রী নিয়ে আগারগাঁওয়ের যাবে। প্রথম যাত্রার যাত্রী হিসেবে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মন্ত্রিসভার সদস্য ও আমন্ত্রিত অতিথিরা। জানা গিয়েছে, উত্তরা থেকে আগারওগাঁও পর্যন্ত যেতে সময় লাগবে ১০ মিনিট, ভাড়া পড়বে ৬০ টাকা। প্রকল্প সূত্র বলছে, প্রতি মেট্রোর ছয়টি কোচের মধ্যে দুই প্রান্তের দুটি কোচ অর্থাৎ ট্রেইলর কারে চালক থাকবেন। এসব কোচে ৪৮ জন করে যাত্রী বসতে পারবে। মাঝখানের চারটি কোচ মোটরকারে বসার ব্যবস্থা আছে ৫৪ জনের। সব মিলিয়ে একটি মেট্রোতে বসে যেতে পারবে ৩০৬ জন। প্রতিটি কোচ সাড়ে ৯ ফুট চওড়া। দাঁড়ানো যাত্রীদের ধরার জন্য ওপরে হাতল এবং স্থানে স্থানে খুঁটি আছে। সব মিলিয়ে একটি ট্রেনে বসে ও দাঁড়িয়ে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩০৮ জন যাত্রী চড়তে পারবেন। সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মেট্রো ট্রেনের দুই পাশে সবুজ রঙের প্লাস্টিকের দুই সারি লম্বা আসন পাতা হয়েছে। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় নির্মাণাধীন শহরভিত্তিক রেল ব্যবস্থা হচ্ছে ঢাকা মেট্রো। যা আনুষ্ঠানিকভাবে ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট বা সংক্ষেপে এমআরটি নামে পরিচিত।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শেখ হাসিনার শাসনাকালেই ২০১৩ সালে অতি জনবহুল ঢাকা মহানগরীর ক্রমবর্ধমান যানবাহন সমস্যা ও পথের দুঃসহ যানজট কমিয়ে আনার লক্ষ্যে কৌশলগত পরিবহণ পরিকল্পনা করা হয়। যার অধীনে প্রথমবারের মত ঢাকায় মেট্রো রেল স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়। মেট্রোরেলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড প্রথম পর্যায়ে নির্মাণের জন্য উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০.১ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি লাইন ৬-কে নির্বাচন করা হয়। ২০১৬ সালের ২৬শে জুন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এমআরটি লাইন-৬ এর নির্মাণকাজ শুরু হয়। জাইকা ও ডিএমটিসিএল ২০৩০ সাল নাগাদ ১২৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মোট ৬টি মেট্রো লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে। এই নেটওয়ার্কে ৫১টি এলিভেটেড স্টেশন ও ৫৩টি আন্ডারগ্রাউন্ড স্টেশন থাকবে। ছয়টি লাইন মিলিতভাবে দিনে ৪৭ লক্ষ যাত্রী পরিবহণ করতে পারবে। ২০১৯ সালের ১৫ই অক্টোবর এমআরটি-১ প্রকল্পের আওতায় বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর ও নতুনবাজার থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত মোট ৩১.২৪ কিলোমিটার পথে মেট্রোরেল নির্মিত হবে। এ প্রকল্পের মোট খরচ ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা দেবে জাপান সরকার। সরকারি তহবিল থেকে আসবে বাকি ১৩ হাজার ১১১ কোটি টাকা।