মোদী সরকারের নয়া বিজ্ঞপ্তিতে উঠল বিতর্কের ঝড়। এবারে বন্ধ করে দেওয়া হল প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা (পিএমজেকেএওয়াই)। অর্থাৎ, এখন থেকে দেশের ৮০ কোটি মানুষ আর প্রতি মাসে বিনামূল্যে ৫ কিলোগ্রাম গম পাবেন না। প্রায় দু’ বছর ধরে চলা এই প্রকল্পকে আর দীর্ঘায়িত করতে চায় না কেন্দ্র। সম্প্রতি মোদী মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কেন্দ্র। এই সংক্রান্ত বৈঠকের পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়াল বলেন, ‘‘আমরা সবাই জানি, কেন্দ্রীয় সরকার জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা আইনের অধীনে প্রতি কেজি চাল দেয় ৩ টাকায়। ১ কেজি গম পাওয়া যায় ২ টাকায়। এখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ বার থেকে জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা আইনের অধীনে দরিদ্ররা চাল এবং গম বিনামূল্যে পাবেন। ৮১.৩৫ কোটি মানুষ এই সুবিধা পাবেন। আর যাঁরা অন্নদাতা যোজনার অধীনে ৩৫ কেজি (২১ কেজি চাল এবং ১৪ কেজি গম) পেতেন, তাঁরা এটা বিনামূল্যেই পাবেন। বাকিরা বিনামূল্যে ৫ কেজি করে শস্য পাবেন। খাদ্য নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্র এখন প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকার বোঝা বহন করবে।’’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কোভিড অতিমারীকালে প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনা ছিল ‘আত্মনির্ভর ভারত’ -এর অন্তর্গত একটি প্রকল্প যা অভিবাসী এবং দরিদ্রদের জন্য বিনামূল্যে খাদ্যশস্য সরবরাহ করত। এই প্রকল্প শুরু হয় ২০২০ সালে। এ নিয়ে অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইজ এবং রেশন ডিলারস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু বলেন, ‘‘করোনা আবহে গত আড়াই বছর যাবৎ কেন্দ্রীয় সরকার যে সুবিধা দিত, তা বন্ধ করে দিয়ে দেশের ৮০ কোটি মানুষকে নতুন বছরের উপহার দিল মোদী সরকার।’’ পাশাপাশি তাঁর সংযোজন, ২ লক্ষ কোটি টাকার ভর্তুকি দেওয়ার কথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গয়াল ঘোষণা করলেও আদতে ১ লক্ষ ৭০ কোটি টাকা বাঁচিয়ে নিয়েছেন এই বিনামূল্যে প্রকল্প বন্ধ করে দিয়ে। ‘‘আমাদের দাবি, বিনামূল্যে যে রেশন প্রকল্প চলছে তা চলুক। পাশাপাশি করোনা আবহে শুরু হওয়া প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা প্রকল্পও চলতে থাকুক। কারণ, করোনা এখনও শেষ হয়নি। নতুন করে করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে’’, জানিয়েছেন বিশ্বম্ভর বসু। মোদী সরকারের এহেন সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতিমধ্যেই শোরগোল ছড়িয়েছে রাজনীতির আঙিনায়। প্রতিবাদে সরব হয়েছে বিরোধীরা। নেটমাধ্যমেও বইছে নিন্দার ঝড়।