এবার আরও আঁটসাঁট হতে চলেছে মহানগরীর সুরক্ষা ব্যবস্থা। শহরকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলতে ১৯০টি অত্যাধুনিক ‘ইনফ্রারেড বুলেট ক্যামেরা’ নিয়ে আসছে কলকাতা পুলিশ। যার ফলে
অন্ধকারে প্রচণ্ড গতিতেও বাইক বা গাড়ি চালিয়েও বেরিয়ে গেলেও মিলবে না রেহাই। কাউকে যদি সন্দেহজনকভাবে একই জায়গায় ঘুরতে দেখা যায়, রেহাই নেই তারও। আবার কোথাও বেশি সময়ের জন্য লোকজন জড়ো হলে বা রাস্তায় অনেকক্ষণ ধরে কোনও গাড়ি বা বাইক সন্দেহজনক অবস্থায় পড়ে থাকলে জানান দেবে অত্যাধুনিক সিসিটিভি ক্যামেরা। এই অত্যাধুনিক ক্যামেরা ও তার সংযুক্ত প্রযুক্তির জন্য পাঁচ কোটি টাকা খরচ করতে চলেছে লালবাজার।
পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতায় পুলিশের কয়েক হাজার সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলেও অনেক সময় চলন্ত গাড়িকে শনাক্ত করার ক্ষেত্রে সমস্যার মুখে পড়ে ট্রাফিক পুলি। অতিরিক্ত গতিতে যান চলাচল করলে অনেক সময়ই সেই গাড়ির নম্বরপ্লেটের ছবি তোলা মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে অন্ধকার বা কম আলোয় চলন্ত বস্তু তথা গাড়ির ছবি তুললেও নম্বরপ্লেট ভাল করে বোঝা যায় না। আবার এও দেখা গিয়েছে, কম পিক্সেলের সিসিটিভি ক্যামেরা হওয়ার কারণে স্পষ্ট ছবিও ওঠেনি। এই ধরনের সমস্যা এড়াতে এবার পাঁচ পিক্সেলের ‘ইনফ্রারেড বুলেট ক্যামেরা’ নিয়ে আসছে লালবাজার।
লালবাজারের সূত্র জানিয়েছে, এই অত্যাধুনিক বুলেট ক্যামেরার সঙ্গে সংযোগ থাকছে বিশেষ সফটওয়্যারের। এই বুলেট ক্যামেরাগুলি বসানোর পর সেগুলি যাতে যথেষ্ট সুরক্ষিত থাকে, সেই ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। কেউ যদি ক্যামেরার ক্ষতি বা নষ্ট করতে চায়, তবে বেজে উঠবে অ্যালার্ম। সরাসরি তা সতর্ক করবে লালবাজারকে। প্রত্যেক সেকেন্ডে ২৫ থেকে ৩০ ফ্রেমে চলন্ত বস্তু বা গাড়ির ছবি তোলা সম্ভব হবে। গাড়ির গতি যতই বেশি হোক, স্পষ্ট হবে ছবি। ক্যামেরার ছবি ভেসে উঠবে লালবাজারের কন্ট্রোল রুম ও ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের মনিটরে। এছাড়াও লালবাজারের উচ্চপদস্থ কর্তাদের মোবাইলেও যোগ থাকবে বুলেট ক্যামেরার। প্রয়োজনে আই ফোন বা অ্যানড্রয়েড মোবাইলের মাধ্যমেও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বুলেট ক্যামেরাগুলি।
সফটওয়্যারের মাধ্যমেই কোন এলাকায় কত গাড়ি পার্ক করা রয়েছে, সেগুলির নম্বর কত, তা শনাক্ত করতে পারবে ক্যামেরা। কেউ অনেকক্ষণ ধরে কোনও বিশেষ এলাকায় অকারণে ঘোরাঘুরি করলে যদি বুলেট ক্যামেরার সফটওয়্যার তাকে সন্দেহজনক বলে মনে করে, তবে তা জানান দেবে। কোনও এক জায়গায় একাধিক লোক একসঙ্গে জড়ো হলে তাও জানান দেবে ক্যামেরা। প্রয়োজনে সেখানে তাড়াতাড়ি পাঠানো হবে পুলিশ বাহিনী। কোনও দাবিদারহীন বস্তু অনেকক্ষণ ধরে কোথাও পড়ে থাকলে অথবা দাবিদারহীন গাড়ি বা বাইক অনেক সময় ধরে রাস্তার পাশে পার্কিং করে রাখা থাকলে বুলেট ক্যামেরা তাও জানিয়ে দেবে পুলিশকে। ফলে কেউ নাশকতা করতে চাইলে তাও রোখা যাবে।