বারবার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনা নিয়ে সরব রাজ্য সরকার। পাওনা আদায় করতে রাজ্যের শাসক ও বিরোধীদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াইয়ের পরামর্শ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইমতো রাজ্যের বকেয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দরবার করার কথা ছিল সর্বদলের প্রতিনিধিদের। রাজ্যের স্বার্থে গঙ্গা সহ নদী ভাঙনের মত ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সহায়তার দাবি জানান হবে বলেও ঠিক ছিল। বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী ও পরিষদীয় মন্ত্রীর এই প্রস্তাবে সহমত হয়েছিলেন বিরোধী বিজেপির বিধায়করাও। এ নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়। কিন্তু
নিজেদের অবস্থান থেকে পিছু হটে বিজেপি জানিয়ে দিল, তারা তৃণমূলের সঙ্গে দিল্লীতে দরবার করতে যাবে না।
বিধানসভার বিগত অধিবেশনে রাজ্যের নদী ভাঙনের মত সমস্যার সমাধানে কেন্দ্রীয় সহায়তা পেতে প্রধান বিরোধী দল বিজেপির সাহায্য চান মুখ্যমন্ত্রী। নীতিগত ভাবে সেই প্রস্তাবে রাজিও হয় বিজেপি। বিজেপির থেকে প্রাথমিক সম্মতি পাওয়ার পরেই বিষয়টি নিয়ে বিধানসভায় সরকারিভাবে প্রস্তাব আনা হয়। সেই প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নেয় বিজেপি। আলোচনায় স্থির হয়,কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এ বিষয়ে দরবার করতে বিধানসভা থেকে সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল পাঠানো হবে দিল্লিতে। সেই প্রতিনিধি দলে বিজেপিকে সামিল হতে আর্জি জানায় শাসক দল।
সরকারি প্রস্তাবে নীতিগত ভাবে রাজি হলেও বিধানসভার বাইরে বিজেপির মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা বলেন, সভায় বিরোধীদল নেতা উপস্থিত ছিলেন না। সে কারণে সরকারের এই প্রস্তাবের বিষয়টি তিনি বিরোধী দলনেতাকে জানাবেন। বিজেপি পরিষদীয় দলের নেতা হিসাবে তিনিই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। টিগ্গার এই মন্তব্যে সিঁদুরে মেঘ দেখে তৃণমূল। পরের দিনেই বিষয়টি নিয়ে অধিবেশন কক্ষের মধ্যেই মনোজ টিগ্গার সঙ্গে আলোচনা করেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। শোভনদেবকে বিরোধী দলনেতার সঙ্গে সরসরি কথা বলে জট খোলার পরামর্শ দেন টিগ্গা।
এরপরই মন্ত্রী বিরোধী দলনেতার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। শোভনদেব জানান, বিরোধী দলনেতা তাঁকে বলেছেন, দিল্লীতে সরকারিভাবে যে প্রস্তাবটি পাঠানো হবে তার বয়ান পাঠালে, তা নিয়ে বিধায়কদের সঙ্গে ও দলে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাবেন। এরপর, গত ১২ ডিসেম্বর তিনি সরকারি প্রস্তাবটি বিরোধী দলনেতার দফতরে পাঠিয়ে দেন। সাত দিন কেটে গেলেও কোনও উত্তর না পেয়ে তিনি আবার যোগাযোগের চেষ্টা করেন শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে। কিন্তু, একাধিকবার ফোন করলেও, শুভেন্দু তাঁর ফোন ধরেননি। আজ বিধানসভায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পরিষদীয় মন্ত্রী জানান, ‘বিজেপি প্রতিনিধি দলে যোগ না দিলে জানুয়ারিতে তৃণমূল একাই রাজ্যের স্বার্থে দিল্লী গিয়ে দরবার করবে।’