ফের মাথাচাড়া দিয়েছে করোনা আতঙ্ক। সম্প্রতি চিনে বেড়েছে কোভিডের সংক্রমণ। সতর্ক কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকও। এবার বাংলার পরিস্থিতির উপর নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার এ নিয়ে তিনি একটি কমিটি গড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই নির্দেশ মতো নজরদারি কমিটিও গঠন করেছে স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনেই ওই কমিটির মাথায় রাখা হয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিবকে। এ ছাড়াও ওই কমিটিতে করোনা চিকিৎসার অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন কোভিড বিশেষজ্ঞদের রাখা হবে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, শীঘ্রই বৈঠকে বসতে পারে ওই নজরদারি কমিটি। কোভিড পরিস্থিতির বিষয়টি নজরে ভবিষ্যতে কী কী নির্দেশিকা জারি করা যেতে পারে, ওই বৈঠকে তা নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে। মাস্ক পরা, শারীরিক দূরত্ববিধি বজায় রাখার মতো নিয়মের উপর আবার জোর দেওয়া নিয়েও আলোচনা হতে পারে।পৌনে তিন বছর পর গত শনিবার রাজ্যে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা শূন্যে নেমে গিয়েছিল। এর পর মঙ্গলবারই রাজ্যে সাত জন করোনা আক্রান্তের হদিস মেলে। মৃত্যুও হয় এক জনের। তার পরেই বুধবার নবান্ন সভাঘরে গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি পর্যালোচনা বৈঠকে স্বাস্থ্য আধিকারিকদের কোভিড পরিস্থিতির দিকে নজর রাখার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, চীনের বর্তমান পরিস্থিতির কথা শুনে বৈঠকে মমতা বলেন, ‘‘আমাদের স্বাস্থ্য দফতরকে একটু খবর রাখতে বলব। চিনে যে ভাবে ছড়াচ্ছে… যাঁরা এই রোগটি সম্পর্কে বোঝেন, তাঁদের নিয়ে একটি টিম গঠন করুন।’’ মুখ্যমন্ত্রীই জানিয়ে দেন, ওই দলে কারা কারা থাকবেন। বলেন, ‘‘ওই টিমটাকে নেতৃত্ব দেবেন স্বাস্থ্য সচিব। থাকবেন ডিএম, ডিএইচএসও।’’ চীনে সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্রীয় সরকারও। বুধবার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকে বসার কথা ছিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবীয়ের। সেই সঙ্গে সব কোভিড পরিস্থিতিতে নজর রাখতে বলে ইতিমধ্যেই চিঠি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ। বলেছেন, জাপান, আমেরিকা, দক্ষিণ কোরিয়া, ব্রাজ়িল এবং চিনে সম্প্রতি যে ভাবে কোভিড বাড়ছে, তাতে সংক্রমিতদের নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে বিশেষ জোর দেওয়া দরকার। সংক্রমণ রোখার পাশাপাশি ভাইরাসের রূপগুলি কী ভাবে চরিত্র পাল্টাচ্ছে, তা নজরে রাখা অত্যন্ত জরুরি। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, বিশ্বের কোভিড পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে ইতিমধ্যেই করোনা হাসপাতালগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নে নজর দেওয়া হয়েছে। তবে বাংলায় সংক্রমণের হার এক শতাংশের কমই রয়েছে। ফলত খানিক স্বস্তিতে রাজ্যবাসী।