অতীতে একাধিক বার সংবাদমাধ্যমের সামনে রাজ্য নেতৃত্বের নিন্দা করেছেন তাঁরা। অনেক সময় নাম করেও তাঁদের কাছে কোন নেতা ‘গুরুত্বপূর্ণ’, আর কে নন, তা-ও বলেছেন। দলের বিক্ষুব্ধদের পক্ষ নিয়েও প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছেন। দল যে ওই ধরনের আচরণকে গুরুত্ব দিচ্ছে না, এবার তা স্পষ্ট করে দিয়ে বাংলার দুই বিজেপি সাংসদকে সতর্ক করে দিলেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। ধমকের সুরে বললেন, অন্যদের ‘পরামর্শ’ কম দিয়ে নিজের এলাকার কাজে মন দিন।
গত সোমবার দিল্লীতে বাংলার সাংসদদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন নাড্ডা। সেখানে রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে সকলের বক্তব্য শুনতে চান তিনি। বিজেপি সূত্রে খবর, বাংলার রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা না বলে দুই সাংসদ দলের রাজ্য নেতৃত্ব নিয়ে ‘সমস্যা’র কথা জানিয়ে নানা পরামর্শ দিতে যান। তার পরে নাড্ডা কিছুটা ধমকের সুরে ‘পরামর্শ’ কম দিয়ে নিজের নিজের এলাকায় কাজে মন দিতে বলেন দুই সাংসদকে। পাশাপাশিই, বার্তা দেওয়া হয়েছে অন্যদেরও।
গত লোকসভা নির্বাচনে ১৮টি আসনে জয় পেলেও বাংলায় বিজেপির সাংসদ সংখ্যা এখন ১৬। বাবুল সুপ্রিয় এবং অর্জুন সিংহ চলে গিয়েছেন তৃণমূলে। এই ১৬ জনের মধ্যে ৪ জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। সকলকেই সোমবার কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারের দিল্লীর বাড়িতে ডাকা হয়েছিল। সেই সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী ছাড়াও বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা সুনীল বনশল, মঙ্গল পাণ্ডে, অমিত মালবীয় এবং আশা লাকড়া। আমন্ত্রণ পেয়ে বৈঠকে যোগ দেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
ওই বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা জানিয়েছেন, সকলেই রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানান। শুভেন্দুও নানা মামলায় জড়িয়ে পড়া নেতা, কর্মীদের সমস্যার কথা বলেন। কিন্তু দুই সাংসদ রাজ্য নেতৃত্বের ‘ভূমিকা’ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাতেই তাঁদের নড্ডার বকুনি শুনতে হয়। প্রত্যাশিত ভাবেই তার পরে চুপ করে যান দুই সাংসদ। যদিও প্রকাশ্যে কেউই দুই সাংসদের নাম বলতে নারাজ। কারণ, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে বৈঠকের বিষয় নিয়ে বাইরে মুখ খুলতে নিষেধ করা হয়েছে।
গেরুয়া শিবিরের অনেকের বক্তব্য, সরাসরি কোনও পদক্ষেপের পরিবর্তে ‘পরামর্শ কম দিয়ে কাজে মন দিন’ বলে দুই সাংসদকে সতর্ক করে দিয়েছেন নাড্ডা। বিজেপির অন্দরে ‘অতি সরব’ বলে পরিচিত ওই দুই সাংসদ নিজের এলাকার চেয়ে দিল্লিতে বেশি সময় কাটান বলেও দলের অন্দরে কথাবার্তা চালু আছে। তবে নড্ডা শুধু ওই দু’জনই নয়, সব সাংসদকেই নিজের নিজের লোকসভা এলাকায় বেশি করে সময় দিতে বলেছেন।
