জ্বলছে প্রতিবাদের আগুন। এখনও হিজাব বিরোধী আন্দোলনের ঢেউয়ে কাঁপছে ইরান। আর এই বিদ্রোহ দমনে পাশবিক অত্যাচার চালাচ্ছে সে দেশের সরকার। ইতিমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন কয়েকশো মানুষ। এর মধ্যেই সামনে এল আরেক চাঞ্চল্যকর তথ্য। এক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, মিছিলে থাকা মহিলাদের মুখ, স্তন, উরু ও গোপনাঙ্গ লক্ষ্য করে নির্মমভাবে গুলি চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। এক চিকিৎসকের মতে, আন্দোলনকারী মহিলাদের সৌন্দর্যকে ক্ষতবিক্ষত করতে চাইছে ওই রক্ষীরা। হাসপাতালে যে ডাক্তার ও নার্সরা আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা করছেন তাঁরা জানাচ্ছেন, পুরুষ ও নারীর ক্ষেত্রে আঘাতের জায়গা আলাদা। পাখিমারা গুলি বা পেলেট ব্যবহার করে শরীর ক্ষতবিক্ষত করে দিচ্ছে নিরাপত্তা রক্ষীরা। কিন্তু মহিলাদের ও পুরুষদের শরীরে ভিন্ন অংশেই টার্গেট করছে তারা। যা রীতিমতো শিউরে ওঠার মতো।
জনৈক চিকিৎসক এপ্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ”আমি সদ্য ২০ পেরনো একটি মেয়ের চিকিৎসা করছিলাম। দেখলাম ওঁর গোপনাঙ্গে দু’টি পেলেট আটকে রয়েছে। এছাড়া ভিতরের থাইয়ে আটকে রয়েছে আরও দশটি গুলি। থাইয়ের গুলি সরাতে অসুবিধা হয়নি। কিন্তু যোনির এমন জায়গায় সেগুলি আটকে ছিল যে তা বের করা বেশ কঠিন ব্যাপার ছিল।” তিনি জানিয়েছেন, ওই মেয়েটি তাঁকে জানিয়েছেন, তিনি যখন মিছিলে ছিলেন তখন তাঁকে তাক করে প্রায় জনা দশের নিরাপত্তা রক্ষী পেলেটে বিঁধে দিতে থাকে শরীর। তাদের মূল লক্ষ্যই ছিল উরু ও যোনি। এমন নিষ্ঠুরতা দেখে বিস্মিত সেই চিকিৎসক। তাঁর কথায়, ”ওকে দেখতে দেখতে মনে হচ্ছিল ও তো আমার মেয়েও হতে পারত।” তেহরানের কাছাকাছি এলাকার হাসপাতালের এক চিকিৎসকের মতে, এই ধরনের ঘৃণ্য আচরণের পিছনে রয়েছে বিশেষ কারণ। ”হীনমন্যতা থেকেই এমন আচরণ। ওরা ওদের যৌন অবসাদ থেকে বাঁচতেই তরুণীদের এভাবে গুলি করা হচ্ছে”, বক্তব্য ওই চিকিৎসকের। পাশাপাশি জানা গিয়েছে, সাধারণ বুলেট ব্যবহার না করে এই মুহূর্তে আন্দোলনকারীদের দমাতে পেলেটই ব্যবহার করছে ইরানের নিরাপত্তা রক্ষীরা। একধাক্কায় একঝাঁক পেলেট এসে মাংস ভেদ করে বসে যাচ্ছে। আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি অসংখ্য বিক্ষোভকারীই। গত ১৬ই সেপ্টেম্বর ইরানের নীতি পুলিশের মারে মৃত্যু হয় তরুণী মাহসা আমিনির। তারপর থেকেই দেশজুড়ে প্রতিবাদে সরব হয়েছে সাধারণ মানুষ।