ক্রমেই হিংসাত্মক চেহারা নিচ্ছে কর্ণাটক ও মহারাষ্ট্রের মধ্যে আন্তঃরাজ্য সীমানা বিরোধ। ঘটনাচক্রে দুই রাজ্যেই এখন বিজেপি ক্ষমতাসীন। কর্ণাটকে একক শক্তিতে, মহারাষ্ট্রে তারা প্রধান জোট শরিক। কিন্তু তা সত্বেও সীমান্ত গ্রামের দখলদারী নিয়ে কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়তে নারাজ। মুম্বইয়ে কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্বাইয়ের ছবির ওপর কালি লেপার পর এবার পাল্টা মহারাষ্ট্রের গাড়ির ওপর হামলা শুরু হয়েছে। কর্ণাটকের হিরেবাগেওয়াড়ি টোল প্লাজায় মহারাষ্ট্রের রেজিস্ট্রেশন নম্বর যুক্ত যানবাহনে পাথর ছুঁড়ে মারার ঘটনা ঘটেছে।
আবার উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা গোষ্ঠীর কর্মীরা পুনেতে সোয়ারগেট এলাকায় কর্ণাটক রাজ্য পরিবহণ নিগমের বাসে কালো রঙ ছিটিয়ে দিয়েছে। কর্ণাটকের বাসে ‘জয় মহারাষ্ট্র’ লিখে দিয়েছে তারা। এরই মধ্যে ঔরঙ্গাবাদের কিছু গ্রাম গতকাল পঞ্চায়েতে প্রস্তাব পাশ করিয়ে কর্ণাটকের অংশ হতে চেয়ে বিতর্কে নয়া মাত্রা যোগ করে। সেখানকার বাসিন্দাদের সিংহভাগ কন্নড়ভাষী। তাদের অভিযোগ, রাস্তা, পানীয় জলের মতো মৌলিক সুবিধা থেকে তারা বঞ্চিত। সেই কারণে গ্রামে কোনও শিক্ষক, চিকিৎসক আসতে চান না। তাদের কর্ণাটকের অংশ করে নেওয়া হোক। মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন দলের অভিযোগ, দুই রাজ্যের সীমান্তের গ্রামগুলিতে মহারাষ্ট্র থেকে বিচ্ছিন্ন হতে চাওয়ার পিছনে কর্ণাটকের ইন্ধন আছে।
তবে সীমানা নিয়ে সাম্প্রতিক বিরোধের মূলে আছে বেলগাঁও বা বেলাগাভি তালুক নিয়ে। মহারাষ্ট্র দাবি করে আসছে ১৯৬০-এর দশকে রাজ্যগুলির ভাষা-ভিত্তিক পুনর্গঠনে মারাঠি-সংখ্যাগরিষ্ঠ বেশ কিছু এলাকা কর্ণাটককে ভুলভাবে দেওয়া হয়েছিল। মহারাষ্ট্র এমন ৮০টি মারাঠিভাষী গ্রাম ফেরত চাইছে। একই দাবি করে আসছে কর্ণাটক। মহারাষ্ট্রের দাবি ঘিরে বেলাগাভি গত এক সপ্তাহ যাবৎ অশান্ত হয়ে আছে। একটি কলেজের ফেস্টে কন্নড় পতাকা উত্তোলন করায় মারাঠি ছাত্ররা তাঁকে মারধর করে। গ্রামগুলির অধিকার ধরে রাখতে বেলাগাভিতে সমাবেশের ডাক দিয়েছিলেন কর্ণাটকের দুই মন্ত্রী চন্দ্রকান্ত পাতিল এবং শম্ভুরাজ দেশাই। মুখ্যমন্ত্রী বোম্বাইয়ের অনুরোধে তাঁরা শেষ পর্যন্ত না গেলেও দিনভর উত্তেজনা বজায় ছিল।