বিশ্বকাপে ফের ভাস্বর হয়ে উঠল সূর্যোদয়ের দেশ। গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে জার্মানিকে হারিয়ে চমকে দিয়েছিল জাপান। এবার স্পেনকেও টেক্কা দিল তারা। ১-২ গোলে হার মানল স্প্যানিয়ার্ড-বাহিনী। গোল করলেন রিৎসু দোয়ান এবং আও তানাকা। স্পেনের একমাত্র গোল আলভারো মোরাতার। জার্মানিকে হারানোর পর অনেকেই মনে করেছিলেন, জাপানের জয় নেহাতই অঘটন। কিন্তু কয়েক দিনের তফাতে স্পেনকে হারিয়ে তা ভুল প্রমাণিত করে দিল জাপান। প্রথমার্ধে স্পেনের পাসিং ফুটবলে খানিকটা হচচকিয়ে গেলেও দ্বিতীয়ার্ধে প্রেসিং ফুটবল দিয়ে ফুটবলপ্রেমীদের মন জয় করে নিল তারা। ক্রমাগত আক্রমণ করে গেলেন জুনিয়া ইতো, ইউরি নাগাতোমো, হিদেমাসা মোরিতারা।
এদিন জাপানের বিরুদ্ধে স্পেন খেলা আরম্ভ করেছিল সাবলীল ছন্দেই। শুরু থেকেই দেখা যেতে থাকে পাসের আধিক্য। তার মাঝেই খেলার বিপরীতে সুযোগ পায় জাপান। সের্জিয়ো বুস্কেৎসের থেকে বল কেড়ে নিয়ে আক্রমণে ওঠেন জাপানের দুই ফুটবলার। তবে সেই সুযোগ তারা কাজে লাগাতে পারেনি। এরপরই স্পেন দ্রুত ম্যাচে ফেরে। ১১ মিনিটেই এগিয়ে যায় তারা। গোল করেন আলভারো মোরাতা। বাঁ দিক থেকে নিখুঁত ক্রস ভাসিয়েছিলেন সেজার অ্যাজপিলিকুয়েতা। মাথা ছুঁইয়ে এ বারের প্রতিযোগিতায় তৃতীয় গোল করেন মোরাতা। নেদারল্যান্ডসের কোডি গাকপোর মতো গ্রুপ পর্বের তিনটি ম্যাচেই গোল করেন তিনি। এর পরে স্পেনের দাপট আরও বেশি করে টের পাওয়া যায়। মাঝমাঠে আরও বেশি পাস খেলতে থাকেন রদ্রি, পাউ তোরেসরা। ২৬ মিনিটে সুযোগ পায় স্পেন। মোরাতার থেকে বল পেয়ে শট নিয়েছিলেন দানি ওলমো। তা বাইরে যায়। তবে মোরাতা অফসাইডে থাকার কারণে গোল হলেও বাতিল হয়ে যেত।
ম্যাচের বিরতিতে তাকেফুসা কুবোকে তুলে রিৎসু দোয়ানকে নামান জাপানের কোচ হাজিমে মোরিয়াসু। তড়িঘড়ি সেই কৌশল কাজে দেয়। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে প্রেসিং ফুটবল খেলতে শুরু করে জাপান। স্পেনের দুর্বল রক্ষণের সুযোগ নিয়ে গোল করেন দোয়ান। বক্সের বাইরে বল পান তিনি। সামান্য ভেতরে ঢুকে বাঁ পায়ে জোরালো শট নেন। বাঁ দিকে ঝাঁপিয়েও বলের নাগাল পাননি স্পেনের গোলকিপার উনাই সিমন। ঠিক ২ মিনিট ২২ সেকেন্ডের মধ্যে দ্বিতীয় গোল করে জাপান। এ বার গোল করেন আতোমু তানাকা। এ ক্ষেত্রেও ভূমিকা নেন সেই দোয়ান। বাঁ দিকের প্রায় গোললাইন থেকে ক্রস করেন তিনি। স্পেনের গোলকিপার নিজের জায়গায় ছিলেন না। চলতি বলে পা ঠেকিয়ে গোল করেন তানাকা। যদিও এই গোল নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অনেকেরই দাবি, দোয়ান ক্রস করার সময় বল গোললাইন পেরিয়ে গিয়েছিল। এমনকী সমাজমাধ্যমে সেই ছবি ছড়িয়ে পড়ে। তবে যে কোণ থেকে সেই ছবিগুলি তোলা হয়েছে, তা ‘ভার’ প্রযুক্তি দেখে না। গোললাইনের সোজাসুজি যে ক্যামেরা বসানো রয়েছে, সেই ছবিই দেখা হয়। সেখানে স্পষ্ট দেখা গিয়েছে, দোয়ানের ক্রসের সময় বলের কিছুটা অংশ গোললাইন স্পর্শ করে ছিল। এর পরে ম্যাচে ফেরার মরিয়া চেষ্টা করেছিল স্পেন। জাপানের বক্সে একের পর এক আক্রমণ হানছিল তারা। তবে জয় মেলেনি। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেল জাপান। গ্রুপের দ্বিতীয় দল হিসেবেই শেষ ষোলোর টিকিট পাকা করল স্প্যানিয়ার্ডরা।