জোরকদমে চলছে শেষ লগ্নের প্রস্তুতি। আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। রাত পোহালেই কাঁথিতে জনসভা করবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সভাস্থল রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কাঁথির বাড়ি ‘শান্তিকুঞ্জ’-এর অদূরেই প্রভাতকুমার কলেজের মাঠ। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কাঁথিতে অভিষেকের এই সভা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ইতিমধ্যে অভিষেকের সভায় ১ লক্ষ মানুষের জমায়েতের ঘোষণা করা হয়েছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে। কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা বিধায়ক তরুণ মাইতি বলেন, ‘‘অভিষেকের সভার প্রস্তুতিতে কোনও খামতি রাখা হচ্ছে না। জেলা জুড়ে প্রতিটি বুথ, অঞ্চল ও ব্লক স্তরে সভা, মিছিল, মাইক প্রচার, ব্যানার, দেওয়াল লিখন হয়েছে। তা চলছেও।’’ দলীয় সূত্রে খবর, জমায়েতের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে ইতিমধ্যেই পূর্ব মেদিনীপুরের দুই সাংগঠনিক জেলা – তমলুক এবং কাঁথির তৃণমূল নেতৃত্ব বেশ কয়েক বার পর্যালোচনা বৈঠক সেরে ফেলেছেন।
পাশাপাশি জানা গিয়েছে, মঞ্চ বাঁধার কাজ শেষ পর্যায়ে। সন্ধ্যার মধ্যেই তা শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। ইতিমধ্যেই নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা এলাকা। সভা শুরু হবে শনিবার বেলা ১টা থেকে। তবে সকাল ১০টা থেকে যাতে কর্মী-সমর্থকেরা চলে আসেন, সেই নির্দেশ রয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকাগুলির কর্মী-সমর্থকেরা যাতে জনসভায় যোগ দিতে পারেন, তার জন্য ছোট-বড় গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই বিষয়টি দেখাশোনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বুথ স্তরের নেতৃত্বকে। পঞ্চায়েত এবং ব্লক স্তরেও গাড়ির বন্দোবস্ত করা হয়েছে বলে জানান তরুণ। তিনি বলেন, ‘‘দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হলেও গোটা বিষয়টির উপর নজরদারি চালাবেন জেলা নেতৃত্ব।’’ সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুরের বরোজ এবং অর্জুননগরের মতো কয়েকটি এলাকা তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়েছে। শাসকদল সূত্রে খবর, ওই দুই অঞ্চলের জন্য এক জনকে আহ্বায়ক হিসাবে নিযুক্ত করেন ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ব। ওই এলাকা থেকে ২৫টি বাসে তৃণমূলের কর্মীদের অভিষেকের জনসভায় যোগ দেওয়ার কথা। শুধু বরোজ থেকেই তিনটি বাস, ২০টি অটো এবং ৫০০টি মোটরবাইক নিয়ে যাওয়া হবে বলে ঠিক হয়েছে।
এপ্রসঙ্গে জেলা পরিষদ সদস্য তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা মানব পড়ুয়া বলেন, ‘‘অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি মিহির ভৌমিকের উপরে যে ভাবে আক্রমণ চালিয়েছে বিজেপি, তাতে এলাকাবাসী প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চাইছেন। তাই নতুন করে তাঁরা অভিষেকের জনসভায় যাওয়ার জন্য আমাদের গাড়ির বন্দোবস্ত করার কথা বলেছেন। আমরাও জেলা নেতৃত্বকে বিষয়টি জানিয়েছি।’’ ঠিক হয়েছে, নন্দীগ্রাম-১ ব্লক থেকে ৩৩টি বাস এবং নন্দীগ্রাম-২ ব্লক থেকে ১৭টি সভায় যাবে। অভিষেকের সভায় বিপুল জমায়েতের সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় কাঁথি শহরে যানজট এড়াতে বিশেষ ভাবে উদ্যোগী হয়েছে জেলা পুলিশও। সূত্রের খবর, জনসভায় আসা গাড়ির জন্য পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে অভিষেকের গাড়ি ছাড়া আর কোনও গাড়িই মঞ্চের কাছাকাছি পৌঁছবে না বলেই জানিয়েছে তৃণমূল। সবমিলিয়ে তুঙ্গে তোড়জোড়। জেলা জুড়ে চলছে মাইকে প্রচার, মিছিল, দেওয়াল লিখন। ঘন ঘন বুথ এবং ব্লক স্তরের বৈঠক হচ্ছে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়গুলিতে।