আর মাত্র মাসদুয়েকের অপেক্ষা। তারপরই বই-উৎসবে মেতে উঠবে কলকাতা। সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কে বসবে ৪৬তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার আসর। এক বছর আগে এই প্রাঙ্গণের নাম ‘বইমেলা প্রাঙ্গণ’ রেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, বাইপাসের ধারে ‘মিলন মেলা’ প্রাঙ্গণে বেশ কয়েক বছর বইমেলা আয়োজিত হয়। সেই প্রাঙ্গণ সংস্কারের জন্য গত কয়েক বছর রাজ্য সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পাবলিশার্স ও বুক সেলার্স গিল্ড সল্টলেকের করুণাময়ীর কাছে সেন্ট্রাল পার্কে বইমেলার আয়োজন করে। গত বছর বইমেলার উদ্বোধনী মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, এটাই বইমেলার নতুন ঠিকানা। তিনি সেন্ট্রাল পার্কের নামকরণ করেছিলেন ‘বইমেলা প্রাঙ্গণ’। কলকাতা বইমেলা পেয়েছিল তার প্রথম স্থায়ী ঠিকানা। ইতিমধ্যেই ৪৬তম আন্তর্জাতিক বইমেলার ঢাকে কাঠি পড়ে গিয়েছে। বুধবার শহরে সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়ে দেওয়া হল আগামী বছর বইমেলা শুরু হবে ৩০শে জানুয়ারি। আগামী ১২ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে তা। এ বারের থিম দেশ স্পেন। এই নিয়ে দ্বিতীয় বার থিম দেশ হওয়ায় খুশি ভারতে নিযুক্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূত হোসে মারিয়া রিদাও ডমিংগেজ। প্রসঙ্গত, এর আগে ২০০৬ সালে কলকাতা বইমেলার থিম কান্ট্রি ছিল স্পেন।
প্রসঙ্গত, বুধবার ডমিংগেজ ছাড়াও সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গিল্ডের সভাপতি সুধাংশুশেখর দে এবং সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায়। উক্ত বৈঠকে জানানো হয়, স্পেনের প্যাভিলিয়ন তৈরি হবে পরিবেশবান্ধব জিনিস দিয়ে। ভারতের পাশাপাশি বাংলার সংস্কৃতিকেও তুলে ধরা হবে সজ্জায়। থাকবে নারী সমানাধিকারের পক্ষে বার্তা। ডমিংগেজ বলেন, ‘‘ভারতের সঙ্গে স্পেনর সম্পর্ক অত্যন্ত প্রাচীন। তবে এর আগে আমরা কী কী অর্জন করেছি তা গর্বের সঙ্গে জাহির করতে কলকাতা বইেমলার অংশ নিচ্ছি না। বরং আমরা বাংলার থেকে শিখতে চাই।’’ বইমেলায় তাঁদের উদ্যোগে স্প্যানিশ ছবি দেখানো এবং পারফরম্যান্সের আয়োজনও করা হবে বলে জানালেন তিনি।হগিল্ডের তরফে জানানো হয়েছে, করোনা পরিস্থিতির উন্নতির পর গত বছর বইমেলায় এসেছিলেন ২২ লক্ষ বইপ্রেমী। বই বিক্রি হয়েছিল ২৩ কোটি টাকার, যা এখনও পর্যন্ত রেকর্ড। এই পরিসংখ্যান দেখে এ বছর আরও বেশি সংখ্যক প্রকাশনা সংস্থার আবেদন জমা পড়েছে বলে জানিয়েছেন ত্রিদিববাবু। তিনি বলেন, ‘‘গত বছর মোট ৫৭০টি স্টল ছিল। অতিমারির জন্য সামাজিক দূরত্ববিধির কথা মাথায় রেখে আমরা স্টলের আয়তন কমাতে বাধ্য হয়েছিলাম। কিন্তু এ বারে আমরা পুরনো মাপে ফিরছি।’’ উল্লেখ্য, এবছরই শিয়ালদহ-করুণাময়ী মেট্রো চালু হয়েছে। ফলত আগমন ঘটবে আরও বেশি সংখ্যক বইপ্রেমীর, এমনই মন করছে গিল্ড কর্তৃপক্ষ।