ফ্রান্স, ব্রাজিলের পর সোমবার রাতে বিশ্বকাপের তৃতীয় দল হিসেবে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট পাকা করল পর্তুগাল। লুসাইল স্টেডিয়ামে গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে উরুগুয়েকে ২-০ গোলে হারালেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোরা। জোড়া গোল করে নজর কাড়লেন ব্রুনো ফের্নান্দেজ। এদিন হেরে যাওয়ায় অস্বস্তিতে দু’বারের বিশ্বকাপজয়ী উরুগুয়ে। নকআউটে যেতে গেলে পরের ম্যাচে ঘানাকে হারাতেই হবে তাদের। আগের ম্যাচে কোনও মতে জেতার পর এ দিন প্রথম একাদশে একাধিক বদল করেন পর্তুগালের কোচ ফের্নান্দো স্যান্টোস। প্রথমে রক্ষণ জমাট রেখে আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করতে থাকে পর্তুগাল। রোনাল্ডো গোল করার জন্যে মাঝে মাঝেই উঠে যাচ্ছিলেন। কিন্তু গোলের মুখ খুলতে পারছিলেন না। ১৮ মিনিটের মাথায় বক্সের বাইরে থেকে নিজের জায়গায় ফ্রিকিক পান রোনাল্ডো। কিন্তু ওয়ালে লেগে তাঁর শট কর্নার হয়ে যায়। পর্তুগালকে আক্রমণ করার একটাও সুযোগ দিচ্ছিল না উরুগুয়ে। গোলের মুখ খোঁজার লক্ষ্যে উইং বদল করে খেলার চেষ্টা করতে থাকে পর্তুগাল। কিন্তু উরুগুয়ের পাঁচ জন মিলে রক্ষণ করতে থাকে। ৩২ মিনিটের মাথায় অল্পের জন্য গোল খাওয়া থেকে বেঁচে যায় পর্তুগাল। বল নিয়ে একাই এগিয়ে গিয়েছিলেন উরুগুয়ের রদ্রিগো বেন্তাঙ্কুর। তাঁকে পর্তুগালের ডিফেন্ডাররা আটকাতে পারেননি। তবে গোলকিপার দিয়োগো কোস্তার তৎপরতায় স্বস্তি পান পর্তুগাল সমর্থকরা।
এরপর ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর পরেও দু’দলের খেলায় কোনও পরিবর্তন দেখা যায়নি। সেই মাঝমাঠেই বলের নড়াচড়া হচ্ছিল। এর মাঝে মাঠে এক দর্শক ঢুকে পড়ায় কিছু ক্ষণ বন্ধ থাকে ম্যাচ। তার পরেই আক্রমণে ওঠে পর্তুগাল। হোয়াও ফেলিক্সের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। আক্রমণ বজায় রাখার ফল কিছু ক্ষণের মধ্যেই পায় পর্তুগাল। ৫৪ মিনিটের মাথায় এগিয়ে যায় তারা। বাঁ দিক থেকে ক্রস তুলেছিলেন ব্রুনো। হেড করার জন্যে লাফিয়ে ওঠেন রোনাল্ডো। বল জড়িয়ে যায় জালে। তবে এই গোল নিয়ে দীর্ঘ ক্ষণ সংশয় ছিল। তবে বল রোনাল্ডোর মাথায় লেগেছে কিনা সেটা বুঝতে পারেননি রেফারিরা। খালি চোখে দেখা যায়, বল রোনাল্ডোর মাথা স্পর্শ করেনি। দশ মিনিট পরে স্টেডিয়ামের ঘোষকরা জানালেন, গোলদাতা ব্রুনোই। গোল খেয়ে মরিয়া চেষ্টা দেখা যাচ্ছিল উরুগুয়ের মধ্যে। খেলা শেষের ১৭ মিনিট আগে গোল পাওয়ার লক্ষ্যে সুয়ারেজকে নামায় উরুগুয়ে। তার পরেই তাদের খেলায় আরও ঝাঁজ লক্ষ্য করা যায়। দূর থেকে গোমেজের শট লাগে পোস্টে। ফ্রিকিক থেকে সুয়ারেজের বাঁ পায়ের শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। শেষ লগ্নে আবার গোল হজম করে উরুগুয়ে। বক্সের মধ্যে ট্যাকল করতে গিয়ে হাতে বল লাগান জিমেনেজ। পেনাল্টি থেকে দলের এবং নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ব্রুনো। খানিক পরেই তাঁর হ্যাট্রটিকের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। তবে শট পোস্টে লেগে প্রতিহত হওয়ায় তা অধরা থেকে যায়। শেষপর্যন্ত ২-০ গোলে ম্যাচ জিতে মাঠ ছাড়ে পর্তুগাল। গ্রুপ পর্যায়ের তৃতীয় তথা শেষ ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার মুখোমুখি হবে তারা।