নৃশংস সেই দিনগুলোর স্মৃতি এখনও তাজা। সেই দিন আর ফিরুক চায় না এলাকার হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ই। রাজনীতি ও ধর্মের ঊর্ধ্বে উঠে শান্তিতে থাকাটাই একমাত্র লক্ষ্য। তাই দোরগোড়ায় ভোট এলেও মন ছুঁতে পারেনি তাঁদের। কথা হচ্ছে গুজরাতের নারোড়া পাটিয়ার বাসিন্দাদের। রাজনৈতিক স্বার্থেই গোধরা পরবর্তী নেতাদের চক্রান্ত জীবন দুর্বিসহ করেছিল বলেই মনে করেন যাঁরা।
২০০২ সালের মার্চের মাস পয়লা। মিল থেকে হাড়ভাঙা খাটুনি খেটে দু’দন্ড জিরিয়ে নেওয়ার তাগিদে বাড়ির দিকে পা বাড়িয়েছিলেন নুর মহম্মদ। কিন্তু মহল্লায় ঢোকা হয়নি। দূর থেকেই চোখে পড়ে বিভৎসতা। আগ্নেয়াস্ত্র হাতে উন্মত্ত হাজার হাজার যুবকের আস্ফালন দেখেছিলেন দূর থেকেই। কিন্তু স্ত্রী ও সন্তানদের কথা মনে করতেই প্রাণ হাতে মহল্লার দিকে ছুটে যান। কোনওক্রমে বাড়ি পৌঁছে দেখেন দাউদাউ করে ঘর জ্বলছে। পরনের জামা কাপড়ও আগুনের গ্রাসে। ফের প্রাণ হাতে ছুট। আবার আজনবি মনসুরি নিজে বাঁচলেও রক্ষা করতে পারেননি ভাইয়ের স্ত্রীকে। বাকিদের নিয়ে পাড়ি দিয়েছিলেন ভিনরাজ্যে আত্মীয়র বাড়িতে।
হোমগার্ডের কাজ ছেড়ে এখন নুরানি মসজিদের সামনে চায়ের দোকান খুলে বসেছেন। আর নাতি নাতনিদের পাঠিয়েছেন লক্ষ্ণৌতে। সেখানেই বড় হয়েছে। আসলে সেদিনগুলোর ঘটনা ভুলিয়ে দিতেই নাতি নাতনিদের আর নারোড়া পাটিয়ায় ফিরিয়ে আনেননি। পাশেই ঠক্কর নগরের বাসীন্দা রাজেন্দ্র। এখন বয়স পঞ্চাশের কাছাকাছি। হাসপাতালের কর্মী। ঘটনার সময় বয়স কম থাকলেও আজও ভুলতে পারেননি সেই দূর্বিসহ দিনগুলো। প্রতিবেশির বাড়ি জ্বলতে দেখেছেন। দেখেছেন ম়ত্যু মিছিল। তাই যেখান থেকে হিংসার জন্ম গুজরাতে, সেখানেই সম্প্রীতির নজির গড়বেন। পণ করেছে উভয় সম্প্রদায়।