প্রশ্নের মুখে পড়ল সিবিআইয়ের কার্যকারিতা। মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বারবার এই কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে শাসকদল বিজেপির বিরুদ্ধে। মোদী-জমানায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির দাপট চলছে ক্রমশ। অ-বিজেপি দলগুলির অভিযোগ সিবিআই-ইডিকে ব্যবহার করে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় এজেন্সির ভাঁড়ারে পাহাড়প্রমাণ মামলা জমেছে। সেগুলির নিষ্পত্তি কবে হবে, তা ধোঁয়াশায়। ফলে এজেন্সিগুলির তদন্ত প্রক্রিয়া প্রশ্নের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। সেন্ট্রাল ভিজিলেন্স কমিশনের বার্ষিক সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, সিবিআইয়ের ৬,৭০০ দুর্নীতির মামলা আদালতে পড়ে রয়েছে। তার মধ্যে ২৭৫টি মামলা ২০ বছরের বেশি সময় ধরে চলছে। সিবিআই সূত্রের খবর, বাংলায় তাদের ৫০০-র বেশি দুর্নীতির মামলা বিশেষ আদালতগুলিতে দীর্ঘ দিন ধরে চলছে। কোনও মামলার বয়স দশ বছর, কোনওটি আবার কুড়ি পেরিয়েছে, তাও সমাধান হয়নি। কলকাতার সাত আদালতে দুর্নীতি মামলা পড়ে রয়েছে ৫০০-রও বেশি।
পাশাপাশি উল্লেখ্য, আলিপুরে এজেন্সির দু’টি বিশেষ আদালতে ১৯৯টি মামলা, ৩০০-র বেশি মামলা পাঁচটি বিশেষ আদালতে রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই চার্জশিট পর্যন্ত পেশ হয়নি। কয়েকটির আবার বিচার প্রক্রিয়াই শুরু হয়নি। মিলছে না বিচার। এই পরিস্থিতিতে নতুন কেস এলে কী হবে, উদ্বিগ্ন তদন্তকারীরা। সারদা, রোজভ্যালির মতো মামলা আট বছর ধরে চলেই যাচ্ছে। দশ বছর আগে সেবির এক শীর্ষ কর্তা দুর্নীতি কাণ্ডে ধরা পড়েছিলেন, তার বিচার আজও চলছে। বছর পাঁচেক আগে দুর্নীতির দায়ে কলকাতা থেকে গ্রেপ্তার হওয়া এক প্রাক্তন সিবিআই কর্তার মামলায় চার্জশিট পেশ হয়ে গেলেও, মামলা আজও হয়নি। ২০০৪-এ পোস্ট অফিস দুর্নীতি মামলার এক কর্মীকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। সে মামলা আজও চলছে। বাংলার পাঁচ বিশেষ আদালতে বিচারক পদ খালি। এই মামলাগুলির ভবিষ্যত অনিশ্চিত। আদৌ মামলাগুলির কোনওদিন সুরাহা হবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান খোদ সিবিআই। এর মধ্যেই প্রতিনিয়ত নতুন মামলার দায়িত্ব এসেই চলেছে। কার্যত দিশাহারা কেন্দ্রীয় এজেন্সি। কীভাবে চলবে এত মামলার তদন্ত, সেই প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছে জনসাধারণ। বিচারপ্রার্থীরাও সন্দেহে ডুবে। ফলত বিতর্ক মাথাচাড়া দিচ্ছে ক্রমশ।