দেশজুড়ে প্রতিবাদের আগুন এখনও স্তিমিত হয়নি। বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মুক্তি নিয়ে পুঞ্জীভূত হয়েছে ক্ষোভ। এবার এই ইস্যুতেই নতুন বিতর্কের মুখে মোদীরাজ্য। বিলকিস বানোর ধর্ষকদের ‘সংস্কারি ব্রাহ্মণ’ বলেছিলেন গোধরার বিদায়ী বিধায়ক চন্দ্রসিংহ রাউলজি। গুজরাতের বিধানসভা নির্বাচনে গোধরা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে সেই চন্দ্রসিংহকেই ফের প্রার্থী করল পদ্মশিবির। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই তোলপাড় গুজরাত। বিলকিসের গণধর্ষকদের জামিন দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য গুজরাত সরকার যে কমিটি গঠন করেছিল, তার সদস্য ছিলেন চন্দ্রসিংহ। বিলকিসের ১১ জন ধর্ষক জামিন পাওয়ার পর জেলের বাইরে তাদের মালা পরিয়ে বরণ করা হলে সারা দেশে ওঠে বিতর্কের ঝড়। সে সময় এই চন্দ্রসিংহই ধর্ষকদের পাশে দাঁড়িয়ে বলেন, “ওরা সবাই ব্রাহ্মণ। আর ব্রাহ্মণদের ভাল সংস্কারবোধ থাকে। আমার মনে হয়, কেউ কোনও খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে ওই ১১ জনকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করেছে।” বিধায়কের এহেন মন্তব্যের পর ফের বিতর্কের সূত্রপাত হয়। কিন্তু এত কিছুর পরেও ভোটযুদ্ধে তাঁর উপরেই ভরসা রাখছে বিজেপি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, চন্দ্রসিংহ এক সময় অবশ্য কংগ্রেস করতেন। ২০১৭ সালে গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপিতে যোগ দিয়েই টিকিট পেয়ে যান ছ’বারের এই বিধায়ক। প্রসঙ্গত, ২০০২ সালে গুজরাতে গোধরা-পরবর্তী দাঙ্গার সময় পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিসকে গণধর্ষণ করেন এই ১১ জন। বিলকিসের মেয়ে-সহ পরিবারের সাত জনকে তাঁর চোখের সামনেই খুন করা হয়। গত ১৫ই আগস্ট বিলকিসের ১১ জন ধর্ষককে মুক্তি দেওয়া হয়। ঘটনাচক্রে ওই একই দিনে লালকেল্লা থেকে স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতায় নারী ক্ষমতায়নের পক্ষে সওয়াল করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দোষীরা ছাড়া পাওয়ার পর গুজরাত সরকারের কাছে ভয়মুক্ত হয়ে শান্তিতে বাঁচার আর্জি জানিয়েছিলেন বিলকিস। তাঁর স্বামী বলেছিলেন, তাঁরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। সারা দেশেই বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন বিলকিসের ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল। নেটমাধ্যমেও উঠেছিল প্রতিবাদের ঝড়। ক্ষোভে ফেটে পড়েছিল আমজনতা।