দেশজুড়ে কোভিড অতিমারীর প্রকোপে যখন জর্জরিত ও সন্ত্রস্ত সাধারণ মানুষ, তখন কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিলাসবহুল ‘সেন্ট্রাল ভিস্তা’ নির্মাণের কাজে ব্যস্ত ছিল মোদী সরকার। ৯৭১ কোটি টাকা বাজেটের কাজ ইতিমধ্যেই বাড়তে বাড়তে প্রায় ১,২০০ কোটিতে পৌঁছে গিয়েছে। কিন্তু কাজ এখনও অনেক বাকি। তবে এবার আর দেরি করতে রাজি নন মোদী। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিতে নয়া সংসদ ভবনে শীতকালীন অধিবেশন আয়োজনের গোঁ ধরে আছেন তিনি। সে কারণে তড়িঘড়ি কোনও মতে কাজ শেষ করে নয়া সংসদ ভবনের উদ্বোধন করতে মরিয়া কেন্দ্র। নগরোন্নয়ন মন্ত্রক চলতি মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার ফরমান জারি করেছে। শোনা যাচ্ছে, কাজ দ্রুত শেষ করার জন্যে ১০ হাজার লোককে নামানো হতে পারে। নির্মীয়মাণ নয়া সংসদ ভবন পরিদর্শনে গিয়ে কেন্দ্রীয় নগরোন্ননমন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি সিপিডব্লুডি এবং ঠিকাদার সংস্থাকে সাফ জানান, প্রধানমন্ত্রী নতুন সংসদ ভবনে শীতকালীন অধিবেশন বসাতে চান। তাই যত ইচ্ছে লোক বাড়িয়ে দ্রুত কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে দিনরাত এক করে চার হাজার শ্রমিক ‘সেন্ট্রাল ভিস্তা’ নির্মাণের কাজ করছেন। সংখ্যা বাড়িয়ে ১০ হাজার করার নির্দেশও দেন মন্ত্রী। কাজ শেষ না হলে, বর্তমান সংসদ ভবনকেও শীতকালীন অধিবেশনের জন্য তৈরি রাখা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে, নতুন সংসদ ভবনে একদিনের জন্যে প্রতীকী অধিবেশন বসতে পারে। আর এমন তাড়াহুড়োর জেরে প্রবল বিপাকে অফিসাররা। একদিনের জন্যেও অধিবেশন বসলে, যাবতীয় ফাইল-পত্র, লোকসভা-রাজ্যসভার আলোচনা-বিতর্কের রেকর্ডিং ইত্যাদি নিয়ে একবার নতুন, একবার পুরনো ভবনে করা বেশ সমস্যার। নয়া সংসদ ভবনের প্রকৃত অবস্থা না জেনে অধিবেশন সংক্রান্ত বৈঠক ডাকতেও পারছেন না প্রতিরক্ষামন্ত্রী তথা ক্যাবিনেট কমিটি অন পার্লামেন্টারি অ্যাফেয়ার্সের সভাপতি রাজনাথ সিং। নিয়ম অনুযায়ী, অধিবেশনের অন্তত ২১ দিন আগে তারিখ ঘোষণা হয়। এখনও তা হয়নি। ফলে অন্যবারের মতো নভেম্বরেই শীতকালীন অধিবেশন বসবে কি না, তা নিয়ে জোর গুঞ্জন শুরু হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, ডিসেম্বরে অধিবেশন বসতে পারে। তবে কোথায় বসবে, তা এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
