অপেক্ষার অবসান ঘটল ব্রাজিল ভক্তদের। আসন্ন ফুটবল বিশ্বকাপে সেলেকাও-দল কেমন হতে চলেছে, তা নিয়ে বিস্তর জল্পনা চলছিল ফুটবলমহলে। এবার চূড়ান্ত দল ঘোষণা করে দিলেন ব্রাজিলের কোচ তিতে। সোমবার রিয়ো ডি জেনেরোতে ২৬ জনের ফুটবলারের নাম প্রকাশ করেন তিনি। দলে ন’জন ফরোয়ার্ড। তবে চোটের কারণে বাদ পড়েছেন ফিলিপে কুতিনহো। দলে ডাক পেলেন ৩৯ বছর বয়সী ডিফেন্ডার দানি আলভেসও। ষষ্ঠবার বিশ্বকাপ জয়ের লক্ষ্যে ব্রাজিলের কোচ কী দল ঘোষণা করেন, তা নিয়ে ফুটবলপ্রেমীদের আগ্রহ ছিল তুঙ্গে। সোমবার ভারতীয় সময় রাত দশটা নাগাদ যাবতীয় জল্পনার অবসান ঘটান তিতে, আক্রমণাত্মক ফুটবলকে অস্ত্র করেই যে বিশ্বসেরা হওয়ার লক্ষ্যে এগোতে চান তিনি, তা ন’জন ফরোয়ার্ডকে দলে রেখেই বুঝিয়ে দিয়েছেন। নেইমার দা সিলভা স্যান্টোস জুনিয়রের সঙ্গে রয়েছেন রিচার্লিসন, গ্যাব্রিয়েল জেসুস, গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লি, পেদ্রো, রাফিনহা, রদ্রিগো, অ্যান্টনি ডস স্যান্টোস ও ভিনিসিয়াস জুনিয়র। জায়গা হয়নি লিভারপুলের রবের্তো ফির্মিনোর। তবে অনেকেই বিস্মিত দানি আলভেস চূড়ান্ত দলে থাকায়। সবচেয়ে বেশি বয়সে ব্রাজিলের বিশ্বকাপ দলে ডাক পাওয়ার ফুটবলারের নজির এত দিন ছিল দালমা স্যান্টোসের দখলে। ১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে তিনি ৩৭ বছর বয়সে ডাক পান। সোমবার দালমার রেকর্ড ভেঙে দিলেন দানি।
পাশাপাশি, নজির গড়েছেন থিয়াগো সিলভাও। এই নিয়ে টানা চারটি বিশ্বকাপে খেলবেন তিনি। ব্রাজিলের হয়ে এর আগে চারটি করে বিশ্বকাপ খেলেছেন পেলে, নিল্টন স্যান্টোস, কাস্তিলহো, দালমা স্যান্টোস, এমার্সন লেয়াও, কাফু ও রোনাল্ডো নাজারিয়ো। সেই তালিকায় এ বার যুক্ত হল ৩৮ বছর বয়সী থিয়াগোর নাম। তবে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বিশ্বকাপ (পাঁচটি) খেলার নজির রয়েছে লোথার ম্যাথাউজ, রাফায়েল মার্কুয়েজ ও আন্তোনিয়ো কার্বাহালের দখলে। ব্রাজিলের বিশ্বকাপ দলে থাকার কথা ছিল রবের্তো ফির্মিনো ও ফিলিপে কুতিনহোর-ও। কিন্তু চোটের কারণে দলে ঠাঁই হল না কুতিনহোর। বাদ পড়লেন ফির্মিনোও। রবিবার ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে অ্যাস্টন ভিলার ম্যানেজার উনাই এমেরি দলে রাখেননি কুতিনহোকে। অনেকেই ভেবেছিলেন, ছন্দে না থাকার কারণে বাদ পড়েছেন ব্রাজিল তারকা। কিন্তু ম্যান ইউয়ের বিরুদ্ধে ৩-১ গোলে দুরন্ত জয়ের পরে এমেরি জানিয়ে দেন, অনুশীলন করার সময় ঊরুর পেশিতে চোট পেয়েছেন কুতিনহো। তাঁকে অন্তত নয় থেকে ১০ সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকতে হবে। এই কারণেই ম্যান ইউয়ের বিরুদ্ধে দলে রাখেননি। প্রশ্ন উঠেছিল, বিশ্বকাপে কি খেলতে পারবেন কুতিনহো? এমেরি বলেছিলেন, ‘‘কুতিনহোর চোট গুরুতর। জানি না কত দিন ওকে মাঠের বাইরে থাকতে হবে।’’ শেষমেশ অ্যাস্টন ভিলা ম্যানেজারের আশঙ্কাই সত্যি হল। উল্লেখ্য, কাতার বিশ্বকাপে ব্রাজিলের প্রথম ম্যাচ ২৪শে নভেম্বর সার্বিয়ার বিরুদ্ধে। ২৮শে নভেম্বর দ্বিতীয় ম্যাচে নেইমারদের প্রতিপক্ষ সুইৎজারল্যান্ড। ২রা ডিসেম্বর গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ক্যামেরুনের বিরুদ্ধে খেলবেন নেইমাররা।
একনজরে দেখে নেওয়া যাক ব্রাজিল দল :
গোলরক্ষক – অ্যালিসন বেকার, এদেরসন সান্তানা, ওয়েভারটন পেরেরা।
ডিফেন্ডার – দানি আলভেস, দানিলো, আলেক্স সান্দ্রো, আলেক্স তেলেস, ব্রেমের, এদের মিলিতাও, মার্কুইনোস, থিয়াগো সিলভা।
মিডফিল্ডার – ব্রুনো গুইমারেস, কাসেমিরো, এভার্টন রিবেইরো, ফাবিয়ানহো, ফ্রেড, লুকাস পাকেতা।
ফরোয়ার্ড – নেইমার দা সিলভা স্যান্টোস জুনিয়র, রিচার্লিসন, গ্যাব্রিয়েল জেসুস, গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লি, পেদ্রো, রাফিনহা, রদ্রিগো, অ্যান্টনি ডস স্যান্টোস ও ভিনিসিয়াস জুনিয়র।