সেতু দুর্ঘটনায় সরকারিভাবে ১৪১ জনের মৃত্যুর পরেও সোমবার সকালে গুজরাতের মাটিতে দাঁড়িয়েই সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের জন্মদিনে তাঁকে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিন গুজরাতের কেওয়াড়িয়াতে স্ট্যাচু অফ ইউনিটিতে রাষ্ট্রীয় একতা দিবস উপলক্ষে সর্দারের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মোদী। মোরবিতে সেতু দুর্ঘটনার জন্য অবশ্য মোদীর একটি রোড শোর অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী গুজরাতে থাকা স্বত্বেও কেন ঘটনাস্থলে গেলেন না সেই প্রশ্ন উঠছে।
গুজরাত বিজেপির আহ্বায়ক সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, ওই দুর্ঘটনার কারণে এদিন কোনও অনুষ্ঠানই হবে না। একটি অনুষ্ঠানে মোদীর রেল প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কথা ছিল। ২৯০০ কোটি টাকার ওই প্রকল্পের শিলান্যাস অনুষ্ঠানটি বাতিল করা হয়েছে।
রবিবার রাতে গুজরাতে মোরবিতে মাচ্ছু নদীতে ব্রিটিশ আমলের একটি ঝুলন্ত সাঁকো ভেঙে এই দুর্ঘটনা ঘটে। সারারাত উদ্ধারকাজ চালিয়ে নদী থেকে দেহ খুঁজে বের করেছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। সোমবার সকালে দিনের আলো ফুটতেই আরও জোরকদমে উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাংভি জানিয়েছেন, পুলিশের আইজি পদমর্যাদার এক অফিসারকে দিয়ে ফৌজদারি মামলা করে ঘটনার তদন্ত হবে।
প্রসঙ্গত, মাত্র ৫ দিন আগেই সেতুটি সংস্কার করে খুলে দেওয়া হয়েছিল। প্রায় শতাব্দীপ্রাচীন সেতুটি সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ অবস্থায় পৌঁছেছিল। মেরামতের পরও এই ঘটনা ঘটায় গুজরাত সরকার বিরোধীদের তোপের মুখে পড়েছে। শুধু রাজনৈতিক সমালোচনা নয়, এই মর্মান্তিক ঘটনার পর এদিন সকাল থেকে মোরবি শহরে অঘোষিত বনধ পালিত হচ্ছে। কোনও রাজনৈতিক দলের সমর্থনে নয়, শহরের বাসিন্দারাই সোমবার সকাল থেকে ঘরবন্দি। স্কুল-কলেজ থেকে দোকানপাট সব বন্ধ। গোটা শহর শ্মশানপুরীর মতো খাঁ-খাঁ করছে।
দুর্ঘটনার খবর দেওয়া হয় সেনাবাহিনীকেও। রাত ৩টে নাগাদ ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় সেনাবাহিনী। মেজর গৌরব নামে উদ্ধারকারী দলের প্রধান জানান, আমরা আরও দেহ উদ্ধারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। সেনার সঙ্গে উদ্ধারে সহযোগিতা করছে এনডিআরএফ। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এদিন সকাল থেকে সেখানে উপকূল রক্ষী বাহিনীর ৩টি দল পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে ডুবুরি, নৌকা এবং অন্যান্য উদ্ধারকাজে ব্যবহৃত সামগ্রী পাঠানো হয়েছে।