উজ্জ্বল হয়ে থেকে গিয়েছে তাঁর কাজ। কিন্তু তিনি নেই। আফগানিস্তানের গৃহযুদ্ধে তালিবানের গুলিতে নিহত হন চিত্রসাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকি। বিপদের সংকেতবাহী ভয়াবহ যুদ্ধক্ষেত্রের মধ্যেও ক্যামেরার লেন্সে স্থির দু’চোখ রেখে জীবন-মৃত্যুর অনবদ্য সব ছবি তোলার জন্য তাঁকে মরণোত্তর পুলিৎজার পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। বাবার হয়ে নিউ ইয়র্কে সেই পুরস্কার গ্রহণ করল সিদ্দিকির দুই সন্তান, ৪ বছরের সারা ও ৬ বছরের ইউনুস। ২০২১ সালে আফগানিস্তান যুদ্ধের সময় চিত্রসাংবাদিক হিসেবে নিজের কাজ করতে দানিশ ছুটে গিয়েছিলেন আফগানিস্তানে। কান্দাহারে তখন একদিকে ঝাঁকে ঝাঁকে তালিবানের চলছে তালিবানের গুলি। আরেকদিকে অসহায় দেশবাসীর প্রাণ বাঁচানোর জন্য রুদ্ধশ্বাস দৌড়। এসবের ছবিই তুলছিলেন দানিশ সিদ্দিকি। কিন্তু কখন যে ছুটে এসেছিল মৃত্যু, বুঝতেও পারেননি। আচমকা তালিবানের ছোঁড়া কয়েকটি বুলেট ভেদ করে যায় দানিশের শরীর। সঙ্গে সঙ্গেই লুটিয়ে পড়েন তিনি।
স্বভাবতই এই ঘটনায় আলোড়িত হয়ে ওঠে সারা বিশ্ব। ২০১৮ সালে রোহিঙ্গা শিবিরে অত্যাচারের ছবি তুলে ধরে পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছিলেন দানিশ। ফিচার ফটোগ্রাফি বিভাগে তিনি পুরস্কৃত হন। এবার দ্বিতীয়বার পুরস্কারপ্রাপ্তি। আর তা মরণোত্তর। নিউ ইয়র্কের মঞ্চে কর্তৃপক্ষের হাত থেকে বাবার হয়ে পুরস্কার গ্রহণ করল ৬ বছরের ইউনুস ও চার বছরের সারা। দানিশের বাবা আখতার সিদ্দিকি বলেন, “দানিশ আজ আমাদের সঙ্গে নেই। কিন্তু প্রতি মুহূর্তে ও আমাদের গর্বিত করে তোলে। পুলিৎজার পুরস্কার ওর কঠোর পরিশ্রম, কাজের প্রতি নিষ্ঠা ও সৎ সাংবাদিকতার স্বীকৃতি।” করোনা কালে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছবি তোলার জন্য ঘুরে বেড়িয়েছেন দানিশ। “দুই ছোট বাচ্চাকে ঘরে রেখে ঝুঁকির মধ্যেও ছুটেছিল ছেলে। কোনও কিছুই ওকে নিজের কাজ থেকে সরিয়ে রাখতে পারেনি”, জানিয়েছেন গর্বিত পিতা আখতার।